অর্থনীতি

মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দরে ২য় জেটিতে ভিড়েছে ১ম জাহাজ

কক্সবাজারের মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের অধীনে নবনির্মিত দ্বিতীয় জেটিতে জাহাজ ভিড়েছে। জেটি চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে মাতারবাড়ীতে একসাথে দুটি জাহাজ ভেড়ানোর সুযোগ তৈরি হলো। এতে করে আগের চেয়ে বেশি পণ্য উঠানামা করা সম্ভব হবে বলে বন্দর ব্যবহারকারীরা আশা করছেন।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) ‘হরাইজন ৯’ নামে পানামার পতাকাবাহী ১২০ মিটার দীর্ঘ এবং ৯ মিটার গভীরতাসম্পন্ন জাহাজটি জেটিতে ভেড়ে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, মাতারবাড়ীতে দ্বিতীয় জেটি চালু হওয়ায় বাংলাদেশের উন্নয়নের চাকা আরো সচল হবে এবং সাথে সাথে বন্দরের সক্ষমতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাবে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বর্ধিত বন্দরসীমার অংশ হিসাবে মাতারবাড়ীতে ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বিভিন্ন প্রকল্প যার অন্যতম হচ্ছে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প। এতদিন এই কেন্দ্রের মাত্র একটি জেটি ছিল। ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর মাতারবাড়ি চ্যানেল দিয়ে প্রথমবারের মত বাণিজ্যিক জাহাজ প্রবেশ করে। এর মধ্য দিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে মাতারবাড়ী চ্যানেল। মূলত মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নির্মিত হেভি লিফট বা ভারী কার্গো নামানোর জন্য এই জেটি ব্যবহৃত হচ্ছিল। এরপর জুন পর্যন্ত গত ছয় মাসে ১৭টি বাণিজ্যিক জাহাজ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণসামগ্রী নিয়ে জেটিতে ভেড়ে।

চট্টগ্রাম বন্দরের মাতারবাড়ী জেটিতে জাহাজ ভেড়ানোর সমন্বয়কারী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন মো. আতাউল হাকিম সিদ্দিকী বলেন, এখন থেকে আমরা একসাথে দুটি জাহাজ জেটিতে ভিড়াতে পারবো যার মাধ্যমে বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। শনিবার প্রথম জেটিতে আরো একটি জাহাজ ভিড়বে। ডিসেম্বর নাগাদ অপেক্ষমান না রেখেই সরাসরি আরো বেশি পণ্যবাহী জাহাজ ভিড়ানো যাবে।

উল্লেখ্য, কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মিত হবে ২০২৫ সালে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ ভিড়বে এই জেটিতে। কিন্তু তার আগেই জেটিতে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত হয়েছে আড়াইশ মিটার প্রস্থ, ১৬ মিটার গভীরতা এবং ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেল। এই চ্যানেল বা প্রবেশপথ দিয়েই বঙ্গোপসাগর থেকে জাহাজ বন্দর জেটিতে প্রবেশ করবে। গভীর সাগর থেকে জাহাজগুলো চ্যানেল দিয়ে জেটিতে প্রবেশের জন্য বসানো হয়েছে পথ নির্দেশক ছয়টি বয়া। জাহাজ প্রবেশের চ্যানেলের একপাশে নির্মিত হচ্ছে তিনটি জেটি যেগুলো ব্যবহৃত হবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ সামগ্রী উঠানামার কাজে। আর আশেপাশেই গড়ে উঠবে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *