ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রভাবে রপ্তানি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত মার্চ মাসের রপ্তানি আয়ে আগের ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় রয়েছে; আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবৃদ্ধি হযেছে ৫৫ শতাংশ।
সাম্প্রতিক কয়েক মাসের ইতিবাচক ধারা বজায় রেখে সবশেষ মার্চের ৩১ দিনে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি করে ৪৭৬ কোটি ২২ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৪ দশমিক ৮২ শতাংশ বেশি। গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরের মার্চে ৩০৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল।
মার্চের এ উচ্চ প্রবৃদ্ধি চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত নয় মাসের মোট রপ্তানির ঝুড়িকেও বেশ শক্তিশালী করেছে। এ সময়ে মোট তিন হাজার ৮৬০ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৩ দশমিক ৪১ শতাংশ বেশি।
গত ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে ২ হাজার ৮৯৪ কোটি ডলার পণ্য রপ্তানি হয়।
ইউরোপের দেশ ইউক্রেইনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন শুরুর পর বিশ্ব বাণিজ্যে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়; আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কথা সামনে আসে। তখন যুদ্ধের প্রভাবে বাংলাদেশের রপ্তানিখাত আক্রান্ত হওয়া নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
যুদ্ধের মাসেও রপ্তানি ইতিবাচক থাকার বিষয়ে বিজিএমইএর সহ সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, যুদ্ধের ফলে রাশিয়ার বাজারে সরাসরি বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি সম্পূর্ণ বন্ধ আছে। তবে ইউরোপসহ অন্যান্য অঞ্চলে রপ্তানি স্বাভাবিক থাকায় রপ্তানির ইতিবাচক ধারা অব্যাহত আছে।
“কোভিডের বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর বাংলদেশে প্রচুর ক্রয়াদেশ এসেছে। সেই হিসেবে আগামী জুন পর্যন্ত রপ্তানির এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আমাদের বিশ্বাস। কিন্তু সম্প্রতি গ্যাস সঙ্কট ও কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভের মার্জিন কমে গেছে।”
ইপিবির সবশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বরাবরের মত রপ্তানিতে পোশাকের আধিপত্য বজায় রয়েছে। চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসে তিন হাজার ১৪২ কোটি ৮৪ লাখ ডলারের পোশাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৯ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৩ দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি।
পোশাক ছাড়াও এসময়ে ১১৫ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল রপ্তানি হয়েছে; যাতে প্রবৃদ্ধি রয়েছে প্রায় ৩৭ শতাংশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৮৯ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩১ শতাংশ বেশি।
তবে গত কয়েক মাসের মত রপ্তানিতে নেতিবাচক অবস্থানে রয়েছে পাট ও পাটজাত পণ্য। মার্চ পর্যন্ত নয় মাসে পাটখাতের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৭ শতাংশ পিছিয়ে আছে। পাট ও পাটজাত পণ্য খাত থেকে রপ্তানি হয়েছে ৮৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ৯৫ কোটি ৩৫ লাখ ডলারের পণ্য।