আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর তারিখ ঠিক করতে বলবে বাংলাদেশ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, ঢাকা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করার লক্ষ্যে একটি নির্দিষ্ট ‘একটি তারিখ’ নির্ধারণ করার জন্য নবনির্বাচিত মিয়ানমার সরকারের কাছে দাবি জানাবে। বাংলাদেশের বন্ধু দেশগুলো এ ব্যাপারে নেপিদোর ওপর চাপ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

রাজধানীতে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন’ বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানের পরে তিনি সাংবাদিকদের একথা জানান। খবর বাসসের

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাদেরকে (মিয়ানমারের নবনির্বাচিত সরকার) রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করতে বলবো। তাদের (রোহিঙ্গাদের) ফেরত পাঠাতে আমরা (বাংলাদেশ) প্রস্তুত রয়েছি।’

ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশের বন্ধু দেশগুলো ঢাকাকে আশ্বস্ত করেছে যে, মিয়ানমারের নির্বাচন শেষ হয়েছে, এখন তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য নেপিদোর ওপর নতুন করে চাপ জোরদার করবে।

তিনি বলেন, চীন, জাপান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যের মতো আমাদের বন্ধুরা বলেছে, তারা আমাদের সহায়তা করবে যাতে মিয়ানমার এ ব্যাপারে (রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন) উদ্যোগ নেয়।

ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ-চীন-মিয়ানমার ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগে যুক্ত হয়েছে, যাতে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নেয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোভিড ১৯ মহামারি এবং মিয়ানমারের নির্বাচনের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আলোচনা বন্ধ ছিল। ঢাকা এখন মিয়ানমারে নতুন সরকার গঠনের অপেক্ষায় রয়েছে।

তিনি বলেন, মিয়ানমারে নতুন সরকার পূর্ণাঙ্গরূপে গঠিত হওয়ার পরে অন্যান্য দেশগুলো যখন এই সরকারকে স্বীকৃতি দেবে, বাংলাদেশও তখন স্বীকৃতি দেবে।

ভাসানচর দ্বীপে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, সরকার ভাসানচরে ১ লাখ রোহিঙ্গাকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যদিও স্থানান্তরের তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

তিনি বলেন, ঢাকা রোহিঙ্গাদের এখন স্থানান্তর করতে চাইছে। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত এই রোহিঙ্গারা শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার পক্ষ ঢাকাকে জানিয়েছে যে, রাখাইনে যে কাজ হয়েছে সে বিষয় তারা একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেছে এবং রোহিঙ্গারা তাদের জন্মভূমিতে ফিরে আসার পরে তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার নিশ্চয়তা সম্পর্কে জানতে তাদের এই পুস্তিকা দেওয়া হবে।

মিয়ানমারের পক্ষ বিভিন্নভাবে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন সম্পর্কে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তবে গত তিন বছরে একজন রোহিঙ্গাও রাখাইনে ফিরতে পারেনি।

মিয়ানমার থেকে জোর করে বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় দিয়েছে। তাদের জন্মভূমিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পরে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে বেশিরভাগ রোহিঙ্গা পালিয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *