বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির ক্যাডেটদের দেশপ্রেম, সততা, আত্মবিশ্বাস ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ মেরিন অ্যাকাডেমির ৫৬তম ব্যাচের ক্যাডেটদের ‘মুজিববর্ষ গ্রাজুয়েশন প্যারেড’ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে এ আহ্বান জানান তিনি।
নবীন গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “মনে রাখবে, তোমরা শুধু নির্ভিক সমুদ্রচারী নও, তোমরা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করো। বাংলাদেশের দূত হিসেবে তোমরা কাজ করো। তোমাদের দেশপ্রেম, সততা, আত্মবিশ্বাস, পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে।
“যখন এক দেশের পণ্য আরেক দেশে জাহাজে বয়ে নিয়ে যাবে, তোমরা বাংলাদেশের হাজার বছরের সভ্যতা ও সংস্কৃতি তুলে ধরবে। তোমাদের সততা, দক্ষতা ও কর্তব্যনিষ্ঠা ভবিষ্যত ক্যাডেটদের জন্য পাথেয় হয়ে থাকবে। “
দেশের উন্নয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেওয়া নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরার পাশপাশি বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথাও অনুষ্ঠানে জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “নদীমাতৃক বাংলাদেশ, বিশাল সমুদ্রসীমা আমাদের। এই সমুদ্রসীমা অর্জনের জন্য জাতির পিতা আইন করে দিয়েছিলেন সত্য, কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা কেউ আমাদের সমুদ্রসীমায় যে আমাদের অধিকার আছে, এই বিষয়টি কখনো তারা নজরে আনেনি বা এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।”
১৯৯৬ সালে সরকারে আসার পর আওয়ামী লীগ সরকার এ বিষয়ে কার্যক্রম শুরু করে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক আইন বা ভারত ও মিয়ানমার- দুটো দেশের সঙ্গে আমাদের যে সমুদ্রসীমা, দুই দেশের সঙ্গে আলোচনা, সব কাজ আমরা অনেক দূর এগিয়ে যাই।”
২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসতে না পারায় কাজ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০০৯ এ যখন সরকার গঠন করি, তখন মাত্র হাতে সময় ছিল দুই বছর,… নিয়ম হচ্ছে দশ বছরের মধ্যে আমাদেরকে শুধুমাত্র তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে আমাদেরকে আন্তর্জাতিক আদালতে পেশ করতে হবে। আমরা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সেই কাজ সম্পন্ন করে এক দিকে যেমন দুটি বন্ধুপ্রতীম দেশের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখি, আবার আন্তর্জাতিক আদালতে …সেখানে আমরা জয় লাভ করি।
“যে সমুদ্রসীমা আমরা অর্জন করেছি, সেখানে বিশাল সমুদ্র সম্পদ রয়েছে। এই সম্পদ আহরণ করে আমরা আমাদের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখতে পারব বলে আমরা আশা করি।”
অন্যদের মধ্যে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীসহ ঊর্ধতন কর্মকর্তারা চট্টগ্রামে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।