জাতীয়

রাজধানীতে যান চলাচল স্বাভাবিক

বিএনপি-জামায়াত ও সহযোগী জোটের তৃতীয় দফায় ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের প্রথম দিন রাজধানীতে যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক। বুধবার রাজাধানীর কমলাপুর থেকে সবকটি যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন যথাসময়ে ছেড়ে গেছে। এছাড়া শিডিউল অনুযায়ী পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা ট্রেন যথাসময়ে কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছেছে। তবে রাজধানীর গাবতলী থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। সদরঘাটে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও যাত্রীর সংখ্যা ছিল খুবই কম।

সরেজমিন রাজধানীর উত্তরা, বনানী, গুলিস্তান, পল্টন, শাহবাগ ও ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে অবরোধের তেমন কোনো প্রভাব নেই। সকালে যানবাহন কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে। তবে সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ছিল তুলনামূলক কম।

সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে থাকা আফসানা করিম জানান, তিনি মাত্র ৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে তার কাক্সিক্ষত বাস পেয়েছেন। অবরোধের মধ্যেও সারা দেশে পণ্য ও যাত্রী পরিবহণ চালু রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতি। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে মালবাহী পিকআপ, ট্রাকও চলাচল করেছে নির্বিঘ্নে।

কমলাপুর রেল স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সরওয়ার জানান, বুধবার সবকটি ট্রেন যথাসময়ে ছেড়ে গেছে। কমলাপুরসহ দেশের প্রতিটি স্টেশনেই যাত্রীর ভিড় ছিল।

রেলওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. দিদার আহমেদ বলেন, রেলে পর্র্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিটি স্টেশন ও লাইন এলাকায় রেলওয়ে পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আনসার সদস্যরাও নিয়োজিত রয়েছে। নাশকতা রোধে আমরা সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছি।

মিরপুর প্রতিনিধি জানান, মিরপুরের বিভিন্ন সড়কে আগের অবরোধের তুলনায় যান চলাচল ছিল বেশি। সকাল থেকে বাস, ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেলে লোকজন গন্তব্যে গেছেন। মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরে যানজট দেখা গেছে।

গাবতলী থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়েনি : গাবতলী বাস টার্মিনাল অন্য দিনের তুলনায় ছিল একেবারেই ফাঁকা। যাত্রী না থাকায় ভোর থেকে কোনো দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। এদিকে গাবতলী এলাকায় সতর্ক প্রহরায় ছিল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ। টহল দিতে দেখা গেছে, র‌্যাব ও পুলিশকে। তবে দেখা মিলেনি অবরোধকারীদের। স্ত্রী ও সন্তানসহ গাবতলীতে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন আফজাল হোসেন। তিনি জানান, তার ভাতিজির বিয়ে বৃহস্পতিবার। ফরিদপুরে যাওয়ার উদ্দেশে এসেছেন। কিন্তু কোনো গাড়ি পাচ্ছেন না। বাস ছাড়ার বিষয়ে সুবর্ণ পরিবহণের বাস কন্ডাকটার রাসেল জমাদ্দার বলেন, বাস ছাড়ার জন্য চাপ আছে। কিন্তু যাত্রী নাই। একই কথা জানান, শ্যামলী পরিবহণের স্টাফ রনি। তিনি বলেন, যাত্রী একেবারেই নাই। যদি ৮-১০ যাত্রীও পাওয়া যায় তাহলেও বাস ছাড়ব।

সদরঘাটে লঞ্চে যাত্রী কম : কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, রাজধানীর সদরঘাট থেকে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক ছিল। তবে যাত্রী ছিল কম। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সদরঘাট টার্মিনালে ৩২টি লঞ্চ ভিড়েছে। আর দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে ১৬টি। সরেজমিন দেখা গেছে, বরিশাল, ভোলা, চাঁদপুর, শরীয়তপুরসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে। তবে কোনো কোনো রুটে লঞ্চে এতটাই কম যাত্রী উঠেছে যে, তেলের টাকা উঠবে কিনা সেই আশঙ্কা প্রকাশ করে লঞ্চ সংশ্লিষ্টরা। কুয়াকাটা-১ লঞ্চে পটুয়াখালী থেকে বুধবার ভোরে সদরঘাটে আসেন মো. জলিল। তিনি জানান, ভাড়া নিয়েছে ৪০০ টাকা। অন্য সময়ও এই ভাড়াই নেয়। তবে যাত্রী তেমন ছিল না। শরীয়তপুরের পথে বোগদাদীয়া ৬ ছেড়ে যাওয়ার আগে এই লঞ্চের মাস্টার মো. হƒদয় খান বলেন, প্রথম শ্রেণির ৭ জন, ডেকে ৩৩ জন আর চেয়ারে ৯ জন যাত্রী পেয়েছি। এত কম যাত্রী নিয়ে কীভাবে চলবে জানি না।

সদরঘাট নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, আমরা সতর্ক আছি। এখানে নিরাপত্তাজনিত কোনো সমস্যা নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *