দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে রোজার মাসে ক্রেতাদের ন্যায্যমূল্যে পণ্য সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখতে ছোলা, ডাল, চিনি এবং সয়াবিন তেলের সংগ্রহ বাড়াচ্ছে সরকারি বিপণন সংস্থা (টিসিবি)।
বৃহস্পতিবার সরকারি ক্রয় ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
ওই বৈঠকে টিসিবির মাধ্যমে বিতরণের জন্য ১ কোটি ৭১ লাখ লিটার ভোজ্যতেল, ১৪ হাজার মেট্রিক টন চিনি, ১৯ হাজার মেট্রিক টন মশুর ডাল ও ১০ হাজার মেট্রিক টন ছোলা ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মানুষের কষ্ট রোধে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিসিবির কার্যক্রম ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
বৈঠক শেষে সংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, রজমান মাসে যেসব পণ্যের চাহিদা বেশি সেগুলো থেকেই ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে যে পরিমাণ সহযোগিতা দরকার- তা পূর্ণমাত্রায় দেওয়া হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ভোজ্যতেলের ওপর উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। সেটি আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত মওকুফ করা হয়েছে। এ ছাড়া চিনি ও ছোলারও ওপর আরোপিত ভ্যাট তুলে নেওয়া হয়েছে।
অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয় দু’টি বৈঠক। টিসিবির পণ্য কেনার ক্ষেত্রে সরকারের পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, টিসিবি অর্থনীতির মেরুদণ্ড। অর্থনীতিতে পণ্যের মজুদ দরকার, পাশাপাশি ভোক্তার কাছে সময় মতো ন্যায্যমূল্যে পৌছানো গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা জানেন জিনিসপত্রের অভাবে কোনো বিপদ ঘটে না। বিপদ ঘটে যদি বিতরণ ব্যবস্থায় ব্যত্যয় হয়। সময়মতো বিতরণ করতে না পারলে দেশে বা বিদেশে যেখানের গুদামে পণ্য থাকুক কোনো লাভ হয় না।
তিনি আরও বলেন, টিসিবিকে আরও কার্যকর করে গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে টিসিবিকে নিয়ে যাব। যাতে কোনো মানুষ কষ্ট না পায়। এক কোটি পরিবারকে টিসিবির আওতায় আনা হচ্ছে। ভোজ্যতেল দিয়ে শুরু করছি। এরপর অন্যান্য পণ্য দেওয়া হবে।
ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে টিসিবিকে মেঘনা সুগার রিফাইন্ড লিমিটেডের কাছ থেকে ৫৫ কোটি ৩০ লাখ টাকায় ৭ হাজার মেট্রিক টন চিনি কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছ থেকেও ৭ হাজার মেট্রিক টন চিনি ৫৫ কোটি ৩০ লাখ টাকায় কিনতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ মোট ১৪ হাজার মেট্রিক টন চিনি সর্বমোট ১১০ কোটি ৬০ লাখ টাকায় সরাসরি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভ্যাটসহ প্রতিকেজি চিনির ক্রয়মূল্য হবে ৭৯ টাকা। টিসিবিকে ৮১ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০ হাজার মেট্রিক টন ছোলা ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেনা কল্যাণ সংস্থা, মেসার্স ব্লু স্কাই এন্টারপ্রাইজ এবং রুবি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেডের কাছ থেকে এই ছোলা কেনা হবে।
এদিকে ২১১ কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৯ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন মশুর ডাল কেনা হবে। প্রতি কেজি ডালের মূল্য ১০৮.৫০ টাকা। এ ছাড়া ১ কোটি ৭১ লাখ ১৫ হাজার ৬৫২ লিটার সয়াবিন তেল কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ২৮৭ কোটি ৫৪ লাখ ২৯ হাজার ৫৩৬ টাকা। প্রতি লিটার সয়াবিনের মূল্য হবে ১৬৮ টাকা।