রাজনীতি

রোডমার্চের পর আরও চাঙা চট্টগ্রাম বিএনপি নেতাকর্মীরা

চট্টগ্রামে সমাবেশের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার শেষ হয় সরকার পতনের একদফা দাবিতে বিএনপির ডাকা দেশব্যাপী রোডমার্চ কর্মসূচি। এখান থেকেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৫ দিনের নতুন আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। নগরীর নূর আহমদ সড়কে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ওই সমাবেশে ঘটে বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতি। এলাকাটি কার্যত পরিণত হয়েছিল জনসমুদ্রে।

বিএনপি নেতারা বলছেন, রোডমার্চ ও সমাবেশ থেকে দলের প্রাপ্তি অনেক। গত কয়েক মাসের আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে চট্টগ্রামের বিএনপি নেতাকর্মীরা এমনিতেই হয়ে উঠেছিলেন উজ্জীবিত। সর্বশেষ রোডমার্চ ও সমাবেশের পর তাদের আÍবিশ্বাস আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। তারা এখন আরও বড় আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত। চট্টগ্রাম নগরীর বিশাল সমাবেশ প্রমাণ করে মামলা-হামলাকে বিএনপি এখন আর ভয় করে না।

বিএনপি নেতাদের দাবি, চট্টগ্রামে রোডমার্চের শেষ সমাবেশে বিএনপি নেতাকর্মী ছাড়াও অংশ নিয়েছেন বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষ। এটি দলের জন্য বড় প্রাপ্তি। এই সমাবেশ জানান দিয়েছে, মানুষ এখন পরিবর্তন চায়। তারা বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ নিতেও মুখিয়ে আছে সাধারণ মানুষ। রোডমার্চ ও সমাবেশ থেকে মানুষ সরকারকে বিদায়ের বার্তা দিয়েছে। এই সরকারকে তারা আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। দেখিয়ে দিয়েছে ‘লালকার্ড’। তাই কুমিল্লা-চট্টগ্রাম রোডমার্চ এবং এই কর্মসূচির আওতায় চট্টগ্রামের শেষ জনসভাটি সফল বলে মনে করছেন চট্টগ্রামের বিএনপি নেতাকর্মীরা।

দলীয় সূত্রমতে, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চট্টগ্রামের সমাবেশে বিপুল উপস্থিতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতেই তিনি চট্টগ্রামে ‘গণবিস্ফোরণ’ ঘটেছে বলে মন্তব্য করেন। রোডমার্চের প্রাপ্তি প্রসঙ্গে মহাসচিব চট্টগ্রামের জনসভায় স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘পথে পথে লাখ লাখ মানুষ কুমিল্লা, ফেনী, মীরসরাই ও চট্টগ্রামের সমাবেশে অংশ নিয়েছে। শুধু একটা কথা শোনার জন্য যে, শেখ হাসিনা কবে ক্ষমতা ছাড়বে। এর বাইরে অন্য কোনো কথা মানুষ শুনতে চায় না। ওই বার্তাই আমরা রোডমার্চে নিয়ে এসেছি।’

চট্টগ্রামের সমাবেশের পর সরকারের ভিত নড়ে উঠেছে দাবি করে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ এই সরকারকে আর দেখতে চায় না। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনও চায় না তারা। রোডমার্চ ও চট্টগ্রামের সমাবেশ থেকে তারা সরকারকে তা জানিয়ে দিয়েছে। আশা করছি, সরকার লাখো মানুষের মনের ভাষা বুঝবে।’

সমাবেশে বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষ অংশ নিয়েছে উল্লেখ করে ডা. শাহাদাত বলেন, ‘দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রায় সাত ঘণ্টা নূর আহমদ সড়কে কিছু না খেয়ে রোডমার্চের বহরের অপেক্ষায় ঠায় দাঁড়িয়ে ছিল কর্মীরা। শুধু কর্মী নয়, সাধারণ মানুষও সেখানে দাঁড়িয়েছিল। কারণ সরকারের প্রতি একটা ঘৃণা চলে এসেছে মানুষের মনে। সরকারকে লালকার্ড দেখানোর জন্য তারা সেখানে এতক্ষণ দাঁড়িয়েছিল। লালকার্ড দেখিয়েও দিয়েছে। বিএনপি কী কর্মসূচি দেয়, তা জানার অধীর আগ্রহ ছিল মানুষের। তারা বিএনপির কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে অংশগ্রহণ করছে এবং ভবিষ্যতেও আন্দোলনে থাকবে। এটা আমাদের জন্য বড় অর্জন।’

চট্টগ্রামের নেতাকর্মীরা যে কোনো কঠোর আন্দোলনে যেতে প্রস্তুত উলে­খ করে ডা. শাহাদাত বলেন, ১৮ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশ হবে। সেখান থেকে কেন্দ্রীয় নতুন কর্মসূচি আসবে। নির্বাচন কমিশন ঘেরাও, নির্বাচন কমিশন অভিমুখে পদযাত্রা, সচিবালয় ঘেরাওয়ের মতো কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে। চট্টগ্রামের বিএনপি নেতাকর্মীরা বৃহস্পতিবারের সমাবেশে বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে উপস্থিত হয়ে প্রমাণ করেছে, তারা এ ধরনের কঠোর কর্মসূচি সফল করতে প্রস্তুত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *