সাদা পোশাকের সিরিজ কত সহজেই না জিতে নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ দেখিয়ে দিল, রঙিন পোশাকের ক্রিকেটে তারা কতটা বর্ণময়। এভিন লুইস, ক্রিস গেইলসের ব্যাটিং ঝড়ে ১৬১ রানের লক্ষ্য তারা উড়িয়ে দিল যেন স্রেফ তুড়ি মেরে।
পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় ৮ উইকেটে। গ্রেনাডায় শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকার ১৬০ রান টপকে যায় ক্যারিবিয়ানরা ৩০ বল বাকি রেখেই!
৭ ছক্কায় ৩৫ বলে ৭১ রানের তাণ্ডবে রান তাড়ার নায়ক লুইস। আন্দ্রে ফ্লেচার, ক্রিস গেইল, আন্দ্রে রাসেলরাও রাখেন অবদান।
সেন্ট জর্জেসের জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট ছিল ব্যাটিং সহায়ক। দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর তাই একটু কমই হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ক্যারিবিয়ানদের রান তাড়ায় মনে হলো, ২০০ রানও খুব বড় লক্ষ্য হতো না!
লুইস ও ফ্লেচারের উদ্বোধনী জুটি ৭ ওভারেই তুলে ফেলে ৮৪ রান। কোনোভাবেই এই জুটি থামাতে না পারা প্রোটিয়াদের আশীর্বাদ হয়ে আসে ফ্লেচারের রান আউট। ৩ চার ও ২ ছক্কায় ১৯ বলে ৩০ করে ফেরেন এই ওপেনার।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার স্বস্তি ফেরেনি। লুইস বিধ্বংসী ব্যাটিং চালিয়ে যান, সঙ্গে যোগ দেন গেইল। লুইস ফিফটি স্পর্শ করেন ২২ বলে।
তাবরাইজ শামসির বলে সীমানায় ডেভিড মিলারের দারুণ ক্যাচে লুইসের ঝড় থামে ৭১ রানে। গেইল আর রাসেল মিলে বাকি কাজ সেরে ফেলে অনায়াসেই।
৩ ছক্কায় ২৪ বলে ৩২ রানে অপরাজিত গেইল। ১৫ মাস পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলতে নেমে ৩ ছক্কায় ১২ বলে অপরাজিত ২৩ রাসেল।
ম্য্যাচের প্রথম ভাগে দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা খারাপ ছিল না। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা দলকে ৩ ওভারে ৩২ রান এনে দেন রিজা হেনড্রিকস ও কুইন্টন ডি কক।
১১ বলে ১৭ রান করে হেনড্রিকস আউট হলেও পাওয়ার প্লে কাজে লাগান ডি কক। দুটি করে চার-ছক্কায় এই কিপার ব্যাটসম্যান করেন ২৪ বলে ৩৭।
তৃতীয় উইকেটে রাসি ফন ডার ডাসেন ও টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার নেতৃত্ব দিতে নেমে টেম্বা বাভুমা দলকে এগিয়ে নেন আরেকটু। ১০ ওভারে তাদের রান দাঁড়ায় ৮৬।
এরপরই ছন্দপতন। ২০ বলে ২২ করে বাভুমা আউট হন ফ্যাবিয়ান অ্যালেনকে সুইপ করে ছক্কার চেষ্টায়। মিডল অর্ডারে হাইনরিখ ক্লাসেন, ডেভিড মিলার, জর্জ লিন্ডা ব্যর্থ হন ভিত্তি কাজে লাগাতে। ১১ থেকে ১৫, এই পাঁচ ওভারে রান আসে কেবল ২৯।
কেবল ফন ডার ডাসেনই যা এগিয়ে নেন দলকে। সব সংস্করণেই দলের ভরসা হয়ে ওঠা ব্যাটসম্যান অপরাজিত থাকেন ৩৮ বলে ৫৬ রান করে। তার সৌজন্যেই ১৬০ পর্যন্ত যেতে পারে দল।
কিন্তু লুইস-গেইললা ছন্দ পেয়ে গেলে তো এই রানও তো মামুলি!
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৬০/৬ (হেনড্রিকস ১৭, ডি কক ৩৭, বাভুমা ২২, ফন ডার ডাসেন ৫৬*, ক্লাসেন ৭, মিলার ৯, লিন্ডা ০, রাবাদা ৬*; সিনক্লেয়ার ২-০-২১-০, হোল্ডার ৩-০-২৯-১, অ্যালেন ৪-০-১৮-২, রাসেল ৩-০-২৯-১, ম্যাককয় ৪-০-৩০-০, ব্রাভো ৪-০-৩০-২)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৫ ওভারে ১৬১/২ (ফ্লেচার ৩০, লুইস ৭১, গেইল ৩২*, রাসেল ২৩*; লিন্ডা ২-০-২৪-০, রাবাদা ৩-০-৩২-০, নরকিয়া ২-০-১০-০, এনগিডি ৩-০-৪৬-০, শামসি ৪-০-২৭-১, হেনড্রিকস ১-০-২১-০)।
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১-০তে এগিয়ে।
ম্যান অব দা ম্যাচ: এভিন লুইস।