মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে দাঁড়িয়ে সমৃদ্ধির সোপান বেয়ে আজকের বাংলাদেশকে সোনার বাংলাদেশে পৌঁছে দেওয়ার প্রত্যয় জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, “আমরা দেশের মানুষের শান্তি চাই, নিরাপত্তা চাই, উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে চাই।”
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে হানাদারের আক্রমণের পর বঙ্গবন্ধুই দেন স্বাধীনতার ডাক, শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। তা সফল পরিণতি পায় নয় মাস পর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে।
১৬ ডিসেম্বর ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স (এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ময়দানে মুক্তিবাহিনী ও ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সেনা কমান্ডের যৌথ নেতৃত্বের কাছে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তান। ১৬ ডিসেম্বর বাঙালির জাতিরাষ্ট্র গঠনের জন্মযুদ্ধে জয়ের দিন।
এবার বাঙালির মহাবিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে নেওয়া হয়েছে দুই দিনের অনুষ্ঠানমালা। তাতে সঙ্গী হয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত ছিলেন সম্মানিত অতিথি হিসেবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা সকল দেশের সাথে সুসসম্পর্ক বজায় রাখছি। যেটা জাতির পিতা আমাদের পররাষ্ট্রনীতি দিয়েছিলেন- ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব,কারো সাথে বৈরীতা নয়।’ আমরা সেই পররাষ্ট্রনীতি নিয়েই সকলের সাথে বন্ধুত্ব রেখে আমাদের দেশের উন্নয়নের চাকাকে আমরা সচল রেখেছি।”
জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, নারী নির্যাতন ও মাদকের বিরুদ্ধে জিরো সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, এ দেশের সকল ধর্মের মানুষ যাতে সমানভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারে, তার সরকার তা ‘নিশ্চিত করেছে’।
“আমাদের লক্ষ্য ছিল ২০২১ এর মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হব। আজকে সেটা আমরা অর্জন করেছি। এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে আমরা গড়ে তুলব। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”
কোভিড মহামারী সেই এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলেও সরকার করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করে অর্থনীতির চাকা ‘সচল রেখেছে’ এবং গ্রামীণ অর্থনীতিকে উন্নত করার পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা সম্মাননীয় অতিথির হাতে তুলে দেন ‘মুজিব চিরন্তন’ শ্রদ্ধা স্মারক।
অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলা ও ইংরেজিতে প্রকাশিত দুটি স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।