শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, দেশে এখনও করোনা সংক্রমণ ১৩/১৪ ভাগ আছে। সংক্রমণ ঠিক কতো ভাগে নামলে খুব বড় ঝুঁকি না নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারবো, তা বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে সংক্রমণ ওই পর্যায়ে নেমে আসার অপেক্ষা করবো। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরাশর্শক কমিটি, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য এবং শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এ বিষয়ে একটি যৌথ সভা হয়েছে।
শুক্রবার গাজীপুরে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত শেখ মুজিবুর রহমান পরিবারের শহীদদের জীবনীর ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, স্কুলগুলো খোলার জন্য বিজ্ঞানসম্মতভাবে বলা হয়, করোনা সংক্রমণ শতকরা ৫ ভাগ বা এর নিচে নামলে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া যায়। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে আবারও সামনের সপ্তাহে বসবো।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার পর আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝির পরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে খুলে দিতে পারবো আশা করছি। আমরা চেষ্টা করছি যত দ্রুত সম্ভব (আগামি এক মাসের মধ্যে) বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থী যাদের বয়স ১৮ বছরের বেশি, অর্থাৎ যাদের করোনা টিকা দেয়া যাবে, তাদের টিকা দিয়ে শেষ করা হবে। এ টিকা দেয়ার পর দেহে ইমিউনিটি পেতে যেহেতু আরো সপ্তাহ দু’য়েক সময় লাগে, তাই আশা করছি অক্টোবরের মাঝামাঝির পরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে খুলে দিতে পারবো।
মোবাইলে গেমসের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রযুক্তির ভালোর সাথে মন্দও কিছু থাকে। শুধু এই সময়ের জন্য নয়, মোবাইল এখন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে শিক্ষকরা যেমন দেখবেন তেমনি বাবা মায়ের তদারকিটাও খুব জরুরি। কেননা একটা বড় সময় শিক্ষার্থীরা বাড়িতে কাটান। মোবাইলের মাধ্যমে পড়াশোনা বা অন্য ডিভাইসের মাধ্যমে পড়াশোনা, এটাও এখন বাস্তবতা। এটাকেও এখন মেনে নিতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষে ফিরিয়ে নিলেও অনলাইন পদ্ধতি কিন্তু থাকবে। কাজেই এটা এমন হয় যে শ্রেণি কক্ষে চলে গেলে আমাদের আর কোনো ডিভাইসের ব্যবহার থাকবে না, তা কিন্তু নয়। এখন এই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সময় আসছে, সেখানে ডিজিটাল লার্নিং এখন আমাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়েই যাবে। কাজেই সেখানে কি করে শিক্ষার্থীদেরকে এই ডিজিটাল ডিভাইসের যে নেতিবাচক দিক আছে তা থেকে কিভাবে তাদের মুক্ত রাখবো, সেক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যেমন দায়িত্ব আছে, তেমনি অভিভাবকদের ও একটা বিরাট দায়িত্ব আছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকুক বা না থাকুক সে দায়িত্ব তো অভিভাবকদের পালন করতে হবে।
এর আগে মন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শেখ রাসেল চত্বরে গাছের চারা রোপণ করেন। এ সময় তার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার, গাজীপুর সিটির মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।