দেড় যুগ আগে সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় আসামি রাকিবুর রহমানের ক্ষেত্রে মামলা বাতিল করা হবে কিনা, তা মঙ্গলবার জানা যাবে।
হাই কোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাকিবের আবেদনে শুনানির পর মঙ্গলবার আদেশের জন্য রেখে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।
আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। আর রাকিবুর রহমানের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন।
অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফার ডটকমকে বলেন, অভিযোগ গঠনের পর থেকে এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম বিলম্বিত করার জন্য আসামিরা চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আগামীকাল চূড়ান্ত আদেশ হবে।
তিনি বলেন, ঘটনার সময় আসামির বয়স দশ বছর হয়ে থাকলেও তার ক্ষেত্রে ১৯৭৪ সালের ‘মাইনর অ্যাক্ট’ অনুযায়ী বিচার হবে।
ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে ২০০২ সালের ৩০ অগাস্ট সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যান তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
সড়ক পথে ঢাকায় ফেরার সময় কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়ি বহরে হামলা হয়। বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়া হয়।
শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাসহ স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাংবাদিকরা সেদিন আহত হন। ওই ঘটনায় কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন কলারোয়া থানায় মামলা করতে গেলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
এক যুগ পর ২০১৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা আদালতে নালিশি অভিযোগ করেন কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন। আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করতে সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দেয়।
তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ মে বিএনপির তৎকালীন সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
এরপর হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি রাকিব ২০১৭ সালে হাই কোর্টে মামলা বাতিলের আবেদন করেন। সেখানে বলা হয়, ঘটনার সময় তার বয়স ছিল দশ বছর। সে আবেদনে ২০১৭ সালের ২৩ অগাস্ট হাই কোর্ট মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেয়। সেই সঙ্গে মামলা বাতিল প্রশ্নে রুল জারি করে।
মামলাটি এরপর সেভাবেই পড়ে ছিল। বিষয়টি জানার পর সম্প্রতি এ সংক্রান্ত রুল শুনানির উদ্যোগ নেন অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল এস এম মুনীর।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর মামলা বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুলের ওপর হাই কোর্টে শুনানি শুরু হয়। কয়েক দফা শুনানির পর গত ৮ অক্টোবর রায় দেয় হাই কোর্ট।
রায়ে আসামি রাকিবুর রহমানের ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম বাতিলের প্রশ্নে রুল খারিজ করে দেয়। সেই সঙ্গে মামলাটি তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেয়।