সরকার পুরো দেশকে হীরক রাজার দেশের মতো নির্যাতনের কারখানা বানিয়ে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, হীরক রাজার মতো এই সরকারকে দড়ি ধরে টেনে নামাতে হবে।
বুধবার (৯ মার্চ) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দ্রবূমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা ‘হীরক রাজার দেশে’ সিনেমাটা দেখেছেন? মাঝেমধ্যে এগুলো দেখতে হবে। সরকার গোটা দেশকে এখন নির্যাতনের কারখানা বানিয়েছে। হীরক রাজা তার দেশে এমন করেছিল। একদিন সবাই ক্ষেপে উঠেছিল। ওই রাজা যখন তার একটি মূর্তির উদ্বোধন করতে যায় তখন লোকজন দড়ি ধরে বলে উঠেছিল ‘দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান’। এদের খান খান করে দিতে হবে। তক্তে-তাউস ভেঙে ফেলতে হবে।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারকে দায়ী করে মির্জা ফখরুল বলেন, লুটপাট থেকে সরকার ভাগ পায়। তাদের লোকজন সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য বাড়াচ্ছে। এজন্য দাম কমাতে পারবে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে পরিকল্পিতভাবে লুটপাট করছে দেশের সম্পদ। এরপর তা বিদেশে পাঠাচ্ছে, যা নিয়ে সারাবিশ্বে তুলকালাম হচ্ছে।
কথা বললেই নেতাকর্মীদের নামে মামলা দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, সারা ঢাকা সাবা নামের একটি মেয়ের পোস্টারে ছেয়ে গেছে। তার বাবা গুম হয়েছে। আমরা কি খোঁজ নিয়েছি পরিবারটি কেমন আছে? গতকাল তার মা ফোন করেছিলেন, তার বড় ছেলে অসুস্থ। চিকিৎসার খরচ জোগানোর সামর্থ্য নেই। এই অবস্থা সবখানে চলছে। কী অপরাধ ছিল তাদের? তারা কথা বলতে চেয়েছিলেন। এখন কথা বললেই মামলা দেওয়া হচ্ছে। আকারে ইঙ্গিতে কথা সরকারের বিরুদ্ধে গেলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দেওয়া হয়।
দ্রবমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, শুধু চাল-ডালের দাম কমালেই হবে না। আমাদের জীবনকে সুন্দরভাবে চলতে দিতে হবে। প্রশাসনকে জনগণের সেবক হতে হবে।
অবিলম্বে সরকারকে ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নির্দলীয় সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনে বাধ্য করতে হবে। এটাই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা।
জাতীয়তাবদাী স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ আবদুল কাদির ভূইয়ার জুয়েলের পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আজীজুল বারী হেলাল, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ প্রমুখ।