বিনোদন

সিনেমা হল মালিকদের ঋণ দিতে ১ হাজার কোটি টাকার তহবিল

চলচ্চিত্র শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বিদ্যমান সিনেমা হলগুলো সংস্কার, আধুনিকায়ন এবং নতুন সিনেমা হল নির্মাণের জন্য ঋণ-বিনিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবে রূপ দিতে হল মালিকদের স্বল্প সুদে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ-বিনিয়োগ দিতে ১ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মেট্রোপলিটন এলাকার হল মালিকরা এই তহবিল থেকে ৫ শতাংশ এবং মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরের হল মালিকরা ৪ দশমিক ৫ শতাংশ সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা ঋণ নিতে পারবেন। ১ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণ পরিশোধের সময়সীমা হবে আট বছর।

রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করে সকল তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এতে বলা হয়েছে, দেশের সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের সুস্থ ধারার বিনোদন উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে বিদ্যমান সিনেমা হলগুলো সংস্কার এবং আধুনিক মানের নতুন সিনেমা হল নির্মাণ করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সিনেমা হল মালিকদের স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ/বিনিয়োগ দেওয়া গেলে নতুন নতুন সিনেমা হল নির্মাণের পাশাপাশি বিদ্যমান হলগুলো সংস্কার ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করতে সক্ষম হবেন হল মালিকরা।

সার্বিক বিষয়াদি বিবেচনা করে, সিনেমা হল মালিকদের অনুকূলে ঋণ বিতরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এক হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করেছে। বিদ্যমান সিনেমা হল সংস্কার, আধুনিকায়ন ও এই সংশ্লিষ্ট মেশিনারি/যন্ত্রাংশ/প্রযুক্তি ক্রয় এবং নতুন সিনেমা হল নির্মাণের উদ্দেশ্যে তফসিলি ব্যাংকের অর্থায়নের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা দেওয়া হবে।

নীতিমালার অন্যান্য শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে বিভিন্ন শপিং কমপ্লেক্সে বিদ্যমান সিনেমা হলসহ নতুনভাবে নির্মিতব্য সিনেমা হলসমূহও আলোচ্য পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় ঋণ/বিনিয়োগ সুবিধা প্রাপ্য হবে। তবে, চলতি মূলধন বাবদ কোনরূপ ব্যয় পুনঃঅর্থায়ন সুবিধার আওতায় আসবে না। এ স্কিমের আওতায় গৃহীত ঋণ দ্বারা কোনভাবেই অপর কোন ঋণ/বিনিয়োগ এর দায় পরিশোধ বা সমন্বয় করা যাবে না।

এ স্কিম হতে প্রথম ধাপে ৫০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হবে। প্রথম ধাপে বিতরণকৃত ঋণ/বিনিয়োগের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হবার পর দ্বিতীয় ধাপে ৫০০ কোটি টাকা বিতরণযোগ্য হবে। ব্যাংকিং নিয়মাচার অনুসরণপূর্বক প্রত্যেক গ্রাহককে প্রতিটি সিনেমা হলের জন্য ঋণ/বিনিয়োগ সুবিধার প্রাপ্যতা যুক্তিযুক্তভাবে অর্থায়নকারী ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত হবে। তবে, তা কোনভাবেই প্রতিটি সিনেমা হলের বিপরীতে ৫ কোটি টাকার অধিক হবে না।

স্কিমের আওতায় অংশগ্রহণকারী তফসিলি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক হতে নির্ধারিত ১ দশমিক ৫ শতাংশ হারে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে। গ্রাহক পর্যায়ে মেট্রোপলিটন এলাকায় ৫ শতাংশ সুদ/মুনাফা এবং মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ সুদ/মুনাফা হারে তফসিলি ব্যাংক অর্থায়ন করবে। পুনঃঅর্থায়ন সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ/বিনিয়োগ ১ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ সমমাসিক-ত্রৈমাসিক কিস্তিতে সর্বোচ্চ ৮ আট বছর মেয়াদে গ্রাহক কর্তৃক পরিশোধ্য হবে। বাংলাদেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংক এ পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা গ্রহণের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

পুনঃঅর্থায়ন গ্রহণে আগ্রহী ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশনের সঙ্গে একটি অংশগ্রহণ চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে। এ স্কিমের আওতায় গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ/বিনিয়োগ বিতরণ উত্তর অংশগ্রহণকারী ব্যাংককে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা প্রাপ্তির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ২০২২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত আবেদন করতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *