জাতীয়

সয়াবিন তেল নিয়ে ২ জাহাজ বন্দরে, আসছে আরেকটি

দেশে ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতার মধ্যে বিদেশ থেকে তিনটি জাহাজে করে আসছে প্রায় ৭৫ হাজার মেট্রিক টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল।

দেশের কয়েকটি শীর্ষ ভোজ্যতেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এসব আমদানি করেছে। দুটি জাহাজে ৩২ হাজার টন তেল এরই মধ্যে বন্দরে পৌঁছে গেছে, ৪২ হাজার টন নিয়ে আসছে আরেকটি জাহাজ।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অপরিশোধিত সয়াবিনের দুটি জাহাজ বন্দরের আউটারে এসেছে গত বৃহস্পতিবার। ওই দুটি থেকে খালাস প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্য জাহাজটি ১৯ মার্চ আউটারে আসবে।

এসব সয়াবিন তেল পরিশোধনের পর রোজার আগেই বাজারে ঢুকবে বলে সয়াবিনের সঙ্কট থাকবে না আমদানিকারকের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

বন্দর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার ‘এমটি লুকাস’ নামের একটি মাদার ট্যাংকার এনেছে ১২ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন। এর মধ্যে টিকে গ্রুপের শবনম ভেজিটেবল অয়েল এনেছে পাঁচ হাজার টন, বে শিপিং করপোরেশন এনেছে ২ হাজার ৯৭৫ টন এবং সুপার রিফাইনারি এনেছে ৮ হাজার টন।

একই দিন বহির্নোঙরে আসা ‘এমটি প্যাসিফিক রুবি’তে এসেছে ২০ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল। এর মধ্যে রয়েছে মেঘনা গ্রুপের মেঘনা এডিবল অয়েল রিফাইনারির ৭ হাজার টন, সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন সিটি এডিবল অয়েলের ১০ হাজার টন।

৪২ হাজার ৮৫০ টন সয়াবিন তেল নিয়ে যে ‘এমটি স্ট্যাভেঞ্জার পাইওনিয়ার’ বন্দরে আসছে, তাতে সিটি গ্রুপ ছাড়াও টিকে গ্রুপ, সেনা এডিবল অয়েল, বালাদেশ এডিবল অয়েলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তেল রয়েছে।

আমদানিকারকরা জানান, আমদানি করা অপরিশোধিত সয়াবিন শুরুতে পতেঙ্গার ট্যাংক টার্মিনালে রাখা হবে। শুল্ক কর পরিশোধন শেষে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান তাদের কারখানায় রিফাইন করে বাজারে ছাড়বে।

ঢাকার কারওয়ান বাজারে সয়াবিন তেলের নতুন নামকরণ হয়েছে। কেউ কিনতে বা জানতেই চাইলে দোকানিরা তেলকে ডাকছেন ‘সোনার হরিণ’ নামে। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সয়াবিন আমদানি অব্যাহত রেখেছি। দাম বাড়তি সত্ত্বেও বিদেশ থেকে সয়াবিন এনে খালাস করা হচ্ছে। খালাস শেষে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষ করে বাজারজাত করা হবে।”

“আসন্ন রোজায় সয়াবিন তেলের সঙ্কট হবে না,” বলেন তিনি।

সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে ভোজ্য তেলের বার্ষিক চাহিদা ২০ লাখ টনের মতো, যার ১৮ লাখ টনই আমদানি করতে হয়। আর ভোজ্য তেলের মধ্যে সয়াবিনের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি।

কোভিড মহামারীর মধ্যে গত কিছু দিন ধরেই বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী।

যুক্তরষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘শিকাগো বোর্ড অব ট্রেড’র তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১ হাজার ৭৩৫ ডলার।

তিন জাহাজে করে বাংলাদেশে আমদানি করা সয়াবিন কত দরে কেন হয়েছে, সে বিষয়ে তথ্য জানা যায়নি।

আমদানি মূল্যের সঙ্গে ভ্যাট, পরিশোধন, পরিবহনসহ অন্যান্য খরচ যুক্ত করে বাজারের মূল্য নির্ধারণ করা হবে। এরমধ্যে দাম কমাতে কয়েক পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে সরকার।

সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, “সরকার আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট কমিয়েছে। এর প্রভাব হয়ত বাজারে পড়বে। তবে আমাদের আমদানি করা সয়াবিনের ভ্যাটসহ অন্যান্য কর আগেই পরিশোধ করা হয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *