রাজনীতি

হেফাজতের নতুন আমিরের নাম ঘোষণা

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নতুন আমিরের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সংগঠনটির শুরা কমিটির সিদ্ধান্তে মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীকে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আমির ঘোষণা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) রাতে কমিটির সিদ্ধান্তে মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীকে ভারপ্রাপ্ত আমির হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর আগে সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন মহিবুল্লাহ বাবুনগরী।

এদিকে, সাবেক আমির হাফেজ মাওলানা জুনাইদ বাবুনগরী মারা যান বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে। তাকে দাফন করার কথা রয়েছে রাতেই। তবে তার আগেই ভারপ্রাপ্ত আমিরের নাম ঘোষণা করল সংগঠনটি।

অন্যদিকে, হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলামের ছেলে মোরশেদ বিন নুর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সংগঠনের শুরা মিটিং হয়নি, ফোনে ফোনেই আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমির শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর গত বছরের ১৫ নভেম্বর জুনাইদ বাবুনগরীকে আমির ও নূর হোসাইন কাসেমীকে মহাসচিব করে ১৫১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু নূর হোসাইন কাসেমী গত ১৩ ডিসেম্বর মারা যান।

পরে চলতি বছরের ৭ জুন জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমির ও নুরুল ইসলাম জিহাদীকে মহাসচিব করে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করে হেফাজতে ইসলাম। গত ৭ জুন হেফাজতের ঘোষিত কমিটির ১৬ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। প্রয়াত হেফাজত আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী ও প্রধান উপদেষ্টা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী দুজনে সম্পর্কে আপন মামা-ভাগ্নে।

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর জানাজা সম্পন্ন, লাখো মানুষের ঢল

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর জানাজা সম্পন্ন, লাখো মানুষের ঢল

হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর জানাজার নামাজ সম্পন্ন হয়েছে। এতে ইমামতি করেছেন তার মামা আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।

বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ২০ মিনিটের পর হাটহাজারীতে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমরা উপস্থিত ছিলেন।

মাদ্রাসার ভেতরে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় ভীড়ের কারণে মরদেহ বহনকারী কফিন মাদ্রাসা মাঠ থেকে স্থানীয় ডাকবাংলোতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকেই নামাজে জানাজা পরিচালিত হয়।

এর আগে তার দাফন গ্রামের বাড়িতে নাকি হাটহাজারী মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় দাফন তার হবে—তা নিয়ে আলোচনা চলছিল।পরে বৈঠক করে গ্রামের বাড়িতে দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

যদিও এর আগে দাফনের কথা ছিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে। ওই সময়ে হেফাজতের নায়েবে আমির সালাউদ্দিন নানুপুরী জানিয়েছিলেন, হেফাজতের সাবেক আমির প্রয়াত আল্লামা শফিকে যে কবরস্থানে দাফন করা হয়েছিল সেখানেই দাফন করা হবে বাবুনগরীকে।

প্রথমে সিদ্ধান্ত ছিল লাশ দাফন করা হবে ফটিকছড়ির বাবুনগর গ্রামে বাবুনগরীর পারিবারিক কবরস্থানে। পরে সিদ্ধান্ত হয় হাটহাজারী মাদ্রাসা কবরস্থানে বাবুনগরীকে শায়িত করা হবে।এ নিয়ে কয়েক দফা সিদ্ধান্ত বদল হয়। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত হয়েছে জুনায়েদ বাবুনগরীর দাফন হবে ফটিকছড়ির বাবুনগর গ্রামে।

৬৭ বছর বয়সি দেশের অন্যতম শীর্ষ আলেমে দ্বীন দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, কিডনি ও ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন।

২০২০ সালে হেফাজতের আমির হন জুনায়েদ বাবুনগরী। আমৃত্যু তিনি এই পদে ছিলেন। এর আগে তিনি এ সংগঠনের মহাসচিব পদে ছিলেন। তখন আমির ছিলেন প্রয়াত আল্লামা আহমদ শফী।

বাবুনগরী হেফাজত আমিরের পাশাপাশি চট্টগ্রামের মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক পদেও ছিলেন।

তিনি বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহসভাপতি, চট্টগ্রাম নুরানি তালিমুল কুরআন বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং মাসিক মুঈনুল ইসলামের প্রধান সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি নাজিরহাট বড় মাদ্রাসার মুতাওয়াল্লি, মাসিক দাওয়াতুল হকের পৃষ্ঠপোষক, ইনসাফ২৪.কম ও কওমিভিশন.কমের প্রধান উপদেষ্টাসহ কয়েকটি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের নেতৃস্থানীয় পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *