খেলাধুলা

শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে জিতল সাকিবরা, জিম্বাবুয়ের হার

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর নানা নাটকীয়তায় ভরপুর ম্যাচে জিতেছে বাংলাদেশ।

নাজমুল হোসেন শান্তর অনবদ্য ব্যাটিংয়ের পর তাসকিনের দুর্দান্ত বলে ৩ রানে জিতল বাংলাদেশ।

ব্রিসবেনের গ্যাবায়ে টসে জিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান তোলেন টাইগাররা।

জবাবে তাসকিন-মোস্তাফিজের বোলিং তোপে ৮ উইকেটে ১৪৭ রানে থেমেছে জিম্বাবুয়ে।

শেষ ওভারটি ছিল টান টান উত্তেজনার। সেখানে জয় হয়েছে বাংলাদেশের।

শেষ ওভারটি মোসাদ্দেকের হাতে তুলে দিলেন সাকিব।

দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন ইভান্স (২ রান)। ৪ বলে দরকার ১৫ রান। স্ট্রাইকে নামলেন গারাভা। এ মুহূর্তে লেগবাই থেকে এলো বাউন্ডারি। পরের বলে বিশাল ছক্কা হাঁকান গারাভা। পরের বলে গারাভাকে স্টাম্পিং করে দিলেন সোহান। শেষ বলে দরকার ৫ রান।

সেই বলে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি ব্যাটার মুজারাবানি।

শেষ বলে জমে সবচেয়ে বড় নাটকীয়তা। ব্লেসিং মুজারাবানিও উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় হয়ে যান স্টাম্পড।

জয়ের উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ। দুই দল মাঠ ছেড়েও চলে যায়। পরে রিপ্লেতে দেখা যায় স্টাম্পের আগেই বল ধরেছেন কিপার নুরুল হাসান সোহান। ‘নো’ বল!

তাতে আবার দুই দলকে নামতে হয় মাঠে।

জয়ের জন্য প্রয়োজন ১ বলে ৪ রান। সেই বলেও রান নিতে পারেননি মুজারাবানি। উচ্ছ্বাস বয়ে উঠে গ্যালারির বাংলাদেশ সমর্থকদের মধ্যে।

এর আগে একের পর এক উইকেট হারিয়েও রানের চাকা সচল রাখে জিম্বাবুয়ে। যে কারণে ৩৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়েও শেষ পর্যন্ত জয়ের আশা জিইয়ে রাখে আরভিনের দল।

১৬তম ওভারে দলীয় সংগ্রহ ১০০ ছুঁয়ে ফেলে আফ্রিকার দলটি। প্রথম ৫০ আসে ৪ উইকেট হারিয়ে ৫০ বলে। দ্বিতীয় ৫০ আসে ১ উইকেট হারিয়ে ৪৩ বলে।

দলকে এ পর্যায়ে একাই নিয়ে আসেন শন উইলিয়ামস। রেগিস চাকাভার সঙ্গে ৩৪ রানের জুটি গড়েন তিনি।

তাসকিন সে জুটি ভাঙলে রায়ান বার্লকে সঙ্গে নিয়ে ৬৩ রানের জুটি গড়েন উইলিয়ামস।

জয়ের জন্য শেষ তিন ওভারে প্রয়োজন পড়ে ৪০ রান। তাসকিন ও মোস্তাফিজের ৪ ওভারে কোটা শেষ হয়ে যাওয়ায় তরুণ পেসার হাসান মাহমুদের হাতে বল তুলে দেন সাকিব।

সেই ওভারে ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূরণ করেন শন উইলিয়ামসন। ৩৭ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৫০ রান করেন এ মিডলঅর্ডার।

ওই ওভার থেকে ১৪ রান দিলেন হাসান। ফলে ১২ বলে প্রয়োজন পড়ে ২৬ রানের। দলকে জেতাতে বল নিজের হাতেই তুলে নেন সাকিব।

ওই ওভারে বাউন্ডারি হজম করলেও দুর্দান্ত এক রানআউটে শন উইলিয়ামসকে ফেরালেন সাকিব। ৪২ বলে ৬৪ রানে ফিরলেন উইলিয়ামস।

সাকিবের ওভার থেকে আসে ৯ রান। শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১৬ রান। স্ট্রাইকে রায়ান বার্ল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি জিম্বাবুয়ের।

এ জয়ের পর গ্রুপ বিতে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ।

চার ওভার হাত ঘুরিয়ে ১৯ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন তাসকিন। ১৫ রানে ২ উইকেট পেয়েছেন মোস্তাফিজ। কোনো উইকেট না পেলেও ৩৪ রান দেন সাকিব। ৩৪ রান দিয়ে ২ উইকেট পেয়েছেন মোসাদ্দেক।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫০/৬ (শান্ত ৭১, সৌম্য ০, লিটন ১৪, সাকিব ২৩, আফিফ ২৯*, মোসাদ্দেক ৭, সোহান ১, ইয়াসির ১; এনগারাভা ৪-০-২৪-১, মুজারাবানি ২-০-১৩-২, চাটারা ৩-০-১৮-০, রাজা ৪-০-৩৫-১, ইভান্স ৩-০-৩২-০, মাধেভেরে ২-০-১৮-০, উইলিয়ামস ২-০-১০-১)

জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৪৭/৮ (মাধেভেরে ৪, আরভিন ৮, শুম্বা ৮, উইলিয়ামস ৬৪, রাজা ০, চাকাভা ১৫, বার্ল ২৭*, ইভান্স ২, এনগারাভা ৬, মুজারাবানি ০*; তাসকিন ৪-১-১৯-৩, হাসান ৪-০-৩৬-০, মোসাদ্দেক ৪-০-৩৪-২, মুস্তাফিজ ৪-০-১৫-২, সাকিব ৪-০-৩৪-০)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *