পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে এবং এ সংক্রান্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ পেতে আটটি দেশের সঙ্গে আইনি সহায়তা চুক্তি করার উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তিন সপ্তাহের মধ্যে এ সংক্রান্ত মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স ট্রিটি বা এমএলএটির খসড়া করতে একটি কমিটি কাজ করছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংস্থাটির সচিব মো. মাহবুব হোসেন এসব কথা জানান।
সচিব বলেন, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ থেকে সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ, রেকর্ড সংগ্রহ, পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তি করার জন্য দুদকের পক্ষ থেকে গত বছর ১২ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করা হয়। এছাড়া বিদেশে পাচার হওয়ার সম্পদ বাংলাদেশে ফেরত আনার বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের নেতৃত্বে টাস্কফোর্সের ষষ্ঠ সভাতেও আইনি সহায়তা চুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
দুদক সচিব জানান, এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে আর্থিক বিভাগে একটি অনুরোধপত্র পাঠানো হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গত ১ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট এজেন্সিদের প্রতিনিধিদের নিয়ে সভা করে। ওই সভায় খসড়া এমএলএটি তৈরির বিষয়ে বিএফআইইউর এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।এ কমিটি আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে খসড়া এমএলএটি তৈরি করবে। তা প্রস্তুত হওয়ার পর এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে তারা এগিয়ে যাবেন।
জাতিসংঘের ‘কনভেনশন এগেইস্ট করাপশন’-এর আলোকে এই চুক্তি হবে জানিয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, ‘এই ট্রিটি হলে বিভিন্ন দেশের ভেতরে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা বা তথ্য যাচাই করা বা আদান-প্রদান করা সহজ হবে, সেই লক্ষ্যেই কার্যক্রম চলছে।’
এছাড়া অর্থপাচার সংক্রান্ত সব ধরনের অপরাধের অনুসন্ধান ও তদন্তে মানি ল্ন্ডারিং আইনের সংশোধন চেয়ে সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে দুদক। আইনটি সংশোধন হলে অর্থপাচার প্রতিরোধ ও দুর্নীতিবিরোধী কাজ সহজ হবে বলে মনে করেন সচিব মাহবুব হোসেন।