রাজনীতি

কারও বি-টিম হতে আমাদের রাজনীতি নয়: জিএম কাদের

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন, কাউকে ক্ষমতায় নিতে, কারও বি-টিম হতে বা কারও দাসত্ব করতে আমাদের রাজনীতি নয়। আমরা দেশ ও জাতীর স্বার্থে রাজনীতি করব।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সঙ্গে যারা বন্ধুর মর্যাদায় বন্ধুত্ব করতে চাইবেন, আমরা তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করব। কারও জিম্মি বা ক্রীতদাস হতে রাজনীতি করছি না। রাজনীতিতে বন্ধুত্ব করতে হলে সমানে সমান বন্ধুত্ব করব, চোখে চোখ রেখে বন্ধুত্ব করব। রাজনীতিতে বন্ধুত্বের নামে কারও কাছে মাথা নত করব না। এজন্যই জাতীয় পার্টিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।

বৃহস্পতিবার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত সভা শেষে ইফতার অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে জিএম কাদের এসব কথা বলেন।

এ সময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আরও বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য নির্বাচন একটা ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই পয়সা খরচ করে নির্বাচন করতে আসেন, নির্বাচিত হয়ে সেই পয়সা আদায় করেন। আমরা এমন সংস্কৃতি থেকে রাজনীতিকে বের করতে চাই। নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে ত্যাগী নেতা ছাড়া কাউকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অবস্থার প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত হবে, জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করবে নাকি জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করবে। তিনি বলেন, দেশের মানুষের প্রত্যাশা, নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন এবং সিনিয়র নেতাদের মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচনের আগে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, সুশাসন, আইনের শাসন এবং ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গড়ার জন্যই আমাদের রাজনীতি। আইনের শাসন আছে? আইন কি সবার জন্য সমান? দলীয় লোকজনের জন্য এক আইন আর সাধারণ মানুষের জন্য আরেক আইন। এক শ্রেণির মানুষ বড়লোক থেকে আরও বড়লোক হচ্ছে। তাদের এত টাকা, দেশে তারা টাকা রাখার জায়গা পাচ্ছে না। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করছে। আর বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ প্রতিদিন আরও গরিব হচ্ছে। সাধারণ মানুষ যা আয় করছে তা দিয়ে এখন অর্ধেক চাহিদা মেটে না।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, রমজানে অনেক মানুষ চাহিদামতো খাদ্য পাচ্ছে না। আধা পেট খেয়ে রমজান পালন করছে বেশির ভাগ মানুষ। সাধারণ মানুষ দারুণ অর্থ কষ্টে আছেন। বিভিন্ন জরিপে জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ মাছ-মাংস খেতে পারছে না অনেক দিন ধরে। প্রতিদিনই বেশির ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় এবং অবাস্তব মেগা প্রকল্প তৈরি করে হাজার কোটি টাকা তছরুপ করা হয়েছে। মেগা প্রকল্পগুলোতে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি টাকা খরচ করা হয়েছে। সময় ব্যয় হচ্ছে অনেক গুণ। দেশের মেগা প্রকল্পগুলো কখনোই লাভজনক হবে না।

জিএম কাদের বলেন, সরকারের হাতে টাকা নেই, তাই মূল্যস্ফীতি হচ্ছে। নতুন করে টাকা ছাপানো হচ্ছে আবার বিদেশ থেকে আমদানি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে ডলারের দাম আরও বাড়ছে আর কমে যাচ্ছে টাকার মান। এর ফলে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। আমরা এই অবস্থা তথকে দেশকে মুক্ত করতে চাই। আমরা স্বাধীনতার চেতনায় ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই।

এ সময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, ৩২ বছর রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে থেকেও জাতীয় পার্টি রাজনীতিতে টিকে আছে। এটা আমাদের জন্য বিশাল অর্জন। দেশের রিজার্ভ নেই, তাই সরকার দেশ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। তিনি বলেন আগে ৩০ ভাগ ভাসমান ভোট ছিল। এখন ভাসমান ভোট ৬০ ভাগের বেশি। তাই ভালো রাজনীতি নিয়ে মাঠে থাকলেই জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আমরা শক্তিশালী দল তৈরি করতে পারলে জাতীয় পার্টির কোনো জোটের প্রয়োজন হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *