বিতর্কিত দুই ব্যক্তিকে গোয়েন্দা কর্মকর্তা সাজিয়ে পুলিশ প্রটোকল দেওয়ার ঘটনায় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন কুমার মোদককে অবশেষে সুনামগঞ্জ থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।
পুলিশের আইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন মঙ্গলবার এক আদেশে তাকে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত করেন।
পুলিশ সদর দপ্তর এ বিষয়ে মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে বলা হয়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন কুমার মোদদককে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জনস্বার্থে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হলো। উল্লেখিত কর্মকর্তা সংযুক্ত কর্মস্থলে যোগদানে নিমিত্ত ২ মে (মঙ্গলবার) বর্তমান কর্মস্থলের দয়িত্বভার অর্পন করবেন। অন্যথায় ৩ মে (বুধবার) থেকে তাৎক্ষনিকভাবে অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজ) হিসেবে গণ্য হবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট রেঞ্জে দায়িত্বরত পুলিশের একজন পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন কুমার মোদকের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটি চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে। প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে যা তুলে ধরা হয়েছে তার চেয়েও বেশি তথ্যউপাত্ত ছিল তদন্ত প্রতিবেদনে। পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত প্রতিবেদন পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয় বেশ কয়েকদিন আগে।
এর মধ্যে ২৯ এপ্রিল সিলেট সফরে আসেন পুলিশের আইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন। এ সময় সাংবাদিকরা রিপন কুমার মোদকের বিরুদ্ধে কি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানতে চান।
এ সময় আইজিপি নিয়মানুযায়ী রিপন কুমার মোদকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেন।
এ সময় তিনি বলেন, ওই ঘটনায় ইতোমধ্যেই তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। তাকে শস্তির আওতায় আনা হবে।
আইজিপি বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে এমন অপকর্ম করে ছাড় পাওয়া যাবে না। শুধু রিপন কুমার মোদক নয় পুলিশে অপকর্ম করে কেউই ছাড় পাবে না। কেউ অন্যায় করলে তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি ‘পুলিশ প্রটোকল দিলেন অ্যাডিশনাল এসপি, ‘সোর্সকে সাজালেন বিশেষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা, শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছাপা হয়। এরপরই ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তে কমিটি করে সিলেটের তৎকালীন রেঞ্জ ডিআইজি।
তদন্ত কমিটির কার্যক্রম পরিচালনার সময়ই র্যাবের অভিযানে তার দুই বন্ধু ভুয়া গোয়েন্দা কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুছ ওরফে ডলার নাহিদ ও বিজন রায়কে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে ডলার নাহিদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়ে ঘটনা আদ্যপান্ত তুলে ধরেন। এ সময় রিপন কুমার মোদকের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্বীকার করা হয়।