এ পথে সেপ্টেম্বরে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেললাইনের ট্রায়াল হবে আর অক্টোবরে শুরু হবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল।
ঢাকা থেকে ভাঙ্গা অংশের অগ্রগতি প্রায় ৯২ ভাগ বলে জানিয়েছেন পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন।
শুক্রবার (২৬ মে) প্রকল্পের পরিচালক আফজাল বলেন, সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকা-মাওয়া অংশে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে পুরোদমে। আর অক্টোবরে যাত্রীবাহী রেল চালানোর পরিকল্পনা আছে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু দিয়ে রেল চালাতে কমলাপুরের ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথ নির্মাণের কাজ চলছে। ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি ৭০ শতাংশ।
এ প্রকল্পের কাজ দু’অংশে বিভক্ত হয়ে চলমান রয়েছে। প্রথম অংশ ঢাকা-ভাঙ্গা, দ্বিতীয় অংশ ভাঙ্গা-যশোর।
ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে মোট দূরত্ব ৮২ কিলোমিটার, এরমধ্যে ৭৭ কিলোমিটারে রেললাইন বসানো হয়ে গেছে। এরমধ্যে ভাঙ্গা থেকে মাওয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হয়েছে এ বছরের ৪ এপ্রিল। আর কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে মাওয়া পর্যন্ত সাড়ে ২৩ কিলোমিটারে পাথর বসানোসহ রেললাইনের কাজ বাকি আছে মাত্র সাড়ে ৬ কিলোমিটার।
এ অংশে একের পর এক নির্মাণ হচ্ছে রেললাইন। এই সাড়ে ৬ কিলোমিটার লাইন বসানোর কাজ শেষ হলেই ঢাকা-ভাঙ্গা রুটের কাজ সম্পন্ন হবে।
অন্যদিকে ভাঙ্গা-যশোর কাজের অগ্রগতিও ভালো। এ অংশের অগ্রগতি প্রায় ৭০ শতাংশ। ২০২৪ সালের জুনে এ অংশের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগিয়ে চলছে পুরো কর্মযজ্ঞ।
পুরো প্রকল্পে ১৪টি নতুন রেল স্টেশন নির্মাণের কাজও শেষ পর্যায়ে এখন। একইসঙ্গে পুরনো ৬টি স্টেশনকেও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে এ প্রকল্পের আওতায়।
এ প্রসঙ্গে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, স্টেশন নির্মাণ, সিগন্যালের কাজসহ অন্যান্য কাজ খুবই দ্রুতগতিতে চলছে।
প্রসঙ্গত, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন বসানো এবং স্টেশন ও অন্য অবকাঠামো নির্মাণের জন্য আলাদা প্রকল্প নেয় রেলওয়ে। জিটুজি পদ্ধতিতে এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীন। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। রেল সংযোগের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।
ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হবে ঢাকা-যশোর পর্যন্ত পদ্মা সেতু রেল লিংক রুটটি। এ রুট পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নে এখন পর্যন্ত ব্যয় হচ্ছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে নতুন চার জেলা (মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল) অতিক্রম করে যশোরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। ২০২৪ সালের জুনে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
একইসঙ্গে বিদ্যমান ভাঙ্গা-রাজবাড়ী থেকে কুষ্টিয়া রেলপথ ব্যবহার করতে পারবে ফরিদপুরসহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের মানুষ। ফলে কম খরচেই ঢাকার সঙ্গে পণ্য ও যাত্রীরা চলাচল করেতে পারবে।