দেশের নাগরিক শনাক্তকারী অন্যতম দলিল জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ফের এক কোটির বেশি নাগরিককে নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে নিতে হবে।
কেননা, ১৫ বছর হওয়ায় তাদের এনআইডির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ড. এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেন। এর ভিত্তিতে তখন ৮ কোটি ১০ লাখ নাগরিককে দেওয়া হয় এনআইডি।
আইনে বলা হয়েছে, এনআইডির মেয়াদ হচ্ছে ১৫ বছর। অর্থাৎ সে সময় যারা লেমিনেটিং করা এনআইডি পেয়েছিলেন, তাদের সবার মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছর।
এখন দেশে ভোটার রয়েছে ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জন। অর্থাৎ ভোটার হয়ে তিন কোটি ৮১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জনের মতো নাগরিক পরবর্তীতে এনআইডি নিয়েছেন। এদের মধ্যে যার এনআইডি যখন ১৫ বছর হবে তখনই মেয়াদ শেষ হবে।
কর্মকর্তারা বলছেন, যারা স্মার্টকার্ড নিয়েছেন, তাদের এনআইডির মেয়াদ আরও পরবর্তীতে শেষ হবে। ইসি ২০০৮ সালের ভোটারদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্মার্টকার্ড সরবরাহ করছে। এ পর্যন্ত স্মার্টকার্ড ছাপানো হয়েছে ৭ কোটি ৭৩ লাখ। আর বিতরণ হয়েছে ৭ কোটি ১ লাখ। এই হিসাবে অন্তত এক কোটি নয় লাখ নাগরিককে ফের এনআইডি নিতে হবে সহসাই।
এ বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ূন কবীর বলেন, ১৫ বছর হলেই মেয়াদ শেষ হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ফের এআইডি নিতে হবে। প্রথমবার বিনামূল্যে পরিচয়পত্রটি দেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয়বার নেওয়ার জন্য নাগরিকদের মূল্য পরিশোধ করতে হবে।
তিনি বলেন, চলতি বছরই অনেকের এনআইডির মেয়াদ শেষ হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে চলতি বছর এ কার্যক্রম আর হাতে নেওয়া হবে না। আগামী বছরের শুরু দিকে কার্যক্রমটি হাতে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
বর্তমানে প্রায় সব সেবা নিতে গেলেই জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলকভাবে প্রদর্শন করতে হয়। কেননা, পরিচয় যাচাই করতে ইসির সঙ্গে চুক্তি করেছে ১৬৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৪৬টি সরকারি প্রতিষ্ঠান, ছয়টি মোবাইল কোম্পানি, ৬৩টি বাণিজ্যিক ব্যাংক, ২৮টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পাঁচটি বিমা প্রতিষ্ঠান, আটটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানি এবং অন্যান্য চারটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সার্ভার ব্যবহার করে থাকে ব্যাংক ও মোবাইল অপারেটরগুলো।
এনআইডির ব্যবহার এত মাত্রায় পৌঁছে গেছে যে, এটি এখন নিত্য ব্যবহার করতে হয়। এক্ষেত্রে যাদের মেয়াদোত্তীর্ণ হবে, তাদের সেবা পাওয়া বন্ধ হবে কি-না, এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেই ইসির।
এনআইডি মহাপরিচালক বলেন, এটি একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। এ নিয়ে এখনও কোনো পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। যখন কার্যক্রম শুরু হবে, তখন সবদিক আলোচনা-পর্যালোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।