অর্থনীতি

বর্তমান নিট রিজার্ভ ২৩.৫৬ বিলিয়ন, গ্রস ২৯.৯৭ বিলিয়ন ডলার

বৈদেশিক মুদ্রার এতদিনের (গ্রস) হিসাবের পাশাপাশি নিট হিসাব প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত মেনে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের এ নিট তথ্য প্রকাশ শুরু করলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নতুন হিসাব অনুযায়ী নিট রিজার্ভের পরিমাণ এখন ২৩ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার (২ হাজার ৩৫৬ কোটি ৭৫ লাখ মার্কিন ডলার)। আগের (গ্রস) হিসাবে বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার (২ হাজার ৯৯৭ কোটি ৩৪ লাখ মার্কিন ডলার)।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সাপ্তাহিক নির্বাচিত অর্থনৈতিক সূচকে এ তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক এতদিন নিজস্ব পদ্ধতি অনুসরণ করে বৈদেশিক মুদ্রার তথ্য প্রকাশ আসছে। এ হিসাবের মধ্যে থাকতো রিজার্ভ থেকে গঠন করা ইডিএফ’র মতো বেশ কয়েকটি তহবিলের অর্থ। যার পরিমাণ ৬ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার (৬৪০ কোটি ৫৮ লাখ মার্কিন ডলার)।

রিজার্ভের অর্থে গঠন করা তহবিলগুলো হলো রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল ( ইডিএফ); যা রপ্তানিমুখি শিল্পের জন্য। এবং লং টার্ম ফান্ড (এলটিএফ) ও গ্রিন ট্রান্সফরমেশন ফান্ড (জিটিএফ) নামে দুটি তহবিল থেকে বাংলাদেশ বিমানকে উড়োজাহাজ কিনতে অর্থ এবং পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের খনন কর্মসূচির জন্য।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছে ঋণ নেওয়ার সময় শর্ত ছিল চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের প্রচলিত পদ্ধতির হিসাবায়নের পাশাপাশি নিট রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করতে হবে। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আন্তঃব্যাংকে ডলারের দাম বাড়ছে

আন্তঃব্যাংকে ডলারের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এখন ডলারের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর একই পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। আগে এ দুই দরের মধ্যে বেশ ব্যবধান থাকত।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগে আন্তঃব্যাংকের গড় দামে ডলার বিক্রি করত। এখন সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দাম একই হওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকেও ডলারের দাম বাড়াতে হয়েছে।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বৈদেশিক মুদ্রা বেচাকেনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়া ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আন্তঃব্যাংকে ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১০৯ টাকার বেশি হতে পারবে না।

সোমবার ও বুধবার আন্তঃব্যাংকে ডলারের দাম সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দর একই ছিল। অর্থাৎ ১০৯ টাকা দরে ডলার বেচাকেনা হয়েছে। এর আগে ডলারের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দরের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য থাকত। সর্বনিম্ন দর ১০৮ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ১০৮ টাকা ৭৫ পয়সার মধ্যে থাকত। সর্বোচ্চ দর ১০৯ টাকার মধ্যেই রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বাফেদার বাধার কারণে এর বেশি বাড়তে পারছে না।

বাফেদার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমদানিতে ডলারের দাম হবে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা। আন্তঃব্যাংক বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ১০৯ টাকা করে ডলার কিনে তা আমদানির দায় মেটাতে ১০৯ টাকা করে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করলে ব্যাংকের ক্ষতি হবে। কারণ এ খাতে ব্যাংকের সেবা দেওয়ার বিপরীতে যে খরচ হচ্ছে তা উঠছে না।

বাফেদার নির্দেশনা অনুযায়ী যে দামে ব্যাংক ডলার কিনছে তার চেয়ে এক টাকা বেশি দামে বিক্রি করার সুযোগ রয়েছে। তবে কোনোক্রমেই তা ১০৯ টাকার বেশি হবে না। ফলে আন্তঃব্যাংক থেকে ১০৯ টাকা করে ডলার কিনে তা একই দরে আমদানির বিল পরিশোধে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করা বেশি দিন সম্ভব হবে না।

আন্তঃব্যাংক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডলারের দাম বাড়ানোর ফলে আমদানিতেও এর দাম বাড়বে। নগদ ডলারের দামও বেড়েছে। এখন সর্বোচ্চ ১১২ টাকা করে কোনো কোনো ব্যাংক নগদ ডলার বিক্রি করছে। তবে বেশির ভাগই ব্যাংকই বিক্রি করছে ১১০ থেকে ১১১ টাকার মধ্যে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *