তৃতীয় চন্দ্রাভিযান শুরু করেছে ভারত। শুক্রবার (১৪ জুলাই) দেশটির স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটা উৎক্ষেপণকেন্দ্র থেকে চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে ‘চন্দ্রযান-৩’।
চাঁদে পৌঁছতে এর সময় লাগবে ৪০ দিন।
একটি এলভিএম-৩ রকেট দিয়ে চাঁদের উদ্দেশ্যে চন্দ্রযানটিকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। চন্দ্রাভিযানে থাকছে একটি ল্যান্ডার ও একটি রোভার। ল্যান্ডার চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে আর রোভার চাঁদের মাটিতে ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করতে থাকবে।
ল্যান্ডারটি আগস্টের ২৩-২৪ তারিখে চাঁদের পিঠে নামার কথা। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর প্রতিষ্ঠাতা বিক্রম সারাভাইয়ের নামে ল্যান্ডারটির নাম রাখা হয়েছে ‘বিক্রম’ আর রোভারটির নাম ‘প্রজ্ঞান’।
এই অভিযানে সফল হলে ভারত চতুর্থ দেশ হবে, যারা চাঁদের পিঠে পৌঁছাবে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীন চন্দ্র অভিযানে সফল হয়।
আগের অভিযানে, ২০১৯ সালে ঠিক চাঁদের মাটি ছোঁয়ার সময়ে ল্যান্ডার-রোভার ধ্বংস হয়ে যায়। তবে চন্দ্রযান ২ এর সেই অরবিটার এখনও চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে এবং ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর বেস-স্টেশনে নিয়মিত তথ্য পাঠিয়ে চলেছে।
চন্দ্রযান– ৩ অভিযানেও ওই অরবিটারটিকেই ব্যবহার করা হবে বলে ইসরো জানিয়েছে।
তৃতীয় চন্দ্রাভিযানে ল্যান্ডার-রোভারটির অবতরণ করার কথা চন্দ্রপৃষ্ঠের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে।
ইসরোর প্রধান শ্রীধর পানিক্কর সোমনাথ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, এই অংশটি নিয়ে আমাদের বিশেষ বৈজ্ঞানিক স্বার্থ আছে। চাঁদের বিষুব রেখা অঞ্চলটি নিরাপদে অবতরণের জন্য আদর্শ, কিন্তু ওই অঞ্চল নিয়ে ইতিমধ্যেই অনেক তথ্য রয়েছে।
তিনি বলেন, যদি গুরুত্বপূর্ণ কোনো বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার করতে চাই আমরা, তাহলে দক্ষিণ মেরুর মতো কোনো অঞ্চলেই যেতে হবে। কিন্তু সেখানে অবতরণের ঝুঁকি আছে।
সোমনাথ জানান, রোভারে পাঁচটি যন্ত্র থাকবে, যার মূল লক্ষ্য থাকবে চন্দ্রপৃষ্ঠের প্রাকৃতিক চরিত্র, সেখানকার বায়ুমণ্ডল বিশ্লেষণ করা, আর চন্দ্রপৃষ্ঠের ঠিক নিচে কী হচ্ছে, তা খুঁজে দেখা।
ইসরোর বিজ্ঞানীরা বিবিসিকে জানান, চাঁদের পৃষ্ঠের রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে চাঁদের বয়স আবিষ্কারেরও চেষ্টা হবে। চন্দ্রপৃষ্ঠের ওই দক্ষিণ মেরু অংশেই ২০০৮ সালে পানির সন্ধান পেয়েছিল চন্দ্রযান-১।