জাতীয়

ড. তাহের হত্যা: ফাঁসি কার্যকর হওয়া ২ আসামির দাফন সম্পন্ন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়া দুই আসামির দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এরা হলেন জাহাঙ্গীর আলম ও মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১ মিনিটে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

জাহাঙ্গীর আলমের পারিবারিক সূত্র জানায়, ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে রাজশাহী নগরীর খোঁজাপুর ইদগাহ মাঠে তার জানাজা হয়। পরে ভোর ৬টার দিকে খোঁজাপুর কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। এ সময় জাহাঙ্গীর আলমের বড় ভাই সোহরাব হোসেন, ছোট ভাই মিজানুর রহমান মিজানসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। মতিহার থানার ওসি রুহুল আমিন জানান, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জাহাঙ্গীরের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

ফরিদপুর ও ভাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, ভোর ৬টায় মহিউদ্দিনের লাশ গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গার জান্দি গ্রামে পৌঁছায়। তার শতবর্ষী মা সেতারা বেগম ছেলেকে দেখেন না ১৭ বছর ধরে। ফাঁসির আদেশ ও কার্যকরের বিষয়ও জানতেন না তিনি। ফাঁসি কার্যকরের রাতে বাড়িতে কী কারণে চেয়ার-টেবিল আনা হচ্ছে তাও জানতেন না এই বৃদ্ধা।

পরিবারের লোকজন ও আত্মীয়-স্বজন যখন লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তখন ‘এত লোক কেন, লাশ কার’ এই বলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন সেতারা বেগম। পরে বেলা ১১টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

মহিউদ্দিনের ছোট ভাই আরজু মিয়া বলেন, আমার ভাই ড. মহিউদ্দিনকে মসজিদের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। পানি থাকায় বাবার কবরের পাশে দাফন করা সম্ভব হয়নি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টার থেকে ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হন অধ্যাপক তাহের আহমেদ। ২ ফেব্রুয়ারি তার লাশ বাসার পেছনের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার হয়। এই হত্যা মামলার তদন্তে ওঠে আসে পদোন্নতি না পাওয়ার ক্ষোভে অধ্যাপক তাহেরকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন একই বিভাগের শিক্ষক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।

এ মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক চারজনকে ফাঁসির আদেশ দেন। এ ছাড়া দুজনকে খালাস দেন আদালত।

পরে সাজাপ্রাপ্তরা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আপিল বিভাগ মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের রায় বহাল রাখলেও আসামি নাজমুল আলম ও তার স্ত্রীর ভাই আব্দুস সালামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *