আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র স্থাপনের জন্য তালিকা প্রণয়নে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তালিকা চূড়ান্ত করে পাঠাতে বলেছে সংস্থাটি।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আর অনুলিপি দেওয়া হয়েছে সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও)। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে ভোটকেন্দ্র স্থাপন কমিটির আহ্বায়ক।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভোট ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখ। সে সময় সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০ হাজার ৬৫৭টি। এর মধ্যে যাচাই বাছাই শেষে ৪০ হাজার ১৯৯টি কেন্দ্র চূড়ান্ত করা হয়।
বর্তমানে দেশে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার ১৫৮। এক্ষেত্রে এবার কেন্দ্র আরও বাড়বে।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র স্থাপনের যে নীতিমালা করেছে সেখানে জেলা পর্যায়ে ডিসিকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। এতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিনিধি, পুলিশ সুপার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের প্রতিনিধি, জেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার। আর সদস্য সচিব করা হয়েছে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অথবা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে।
অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান করে উপজেলা পর্যায়ে করা হয়েছে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি। এতে সদস্য হিসেবে রয়েছে উপজেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও অফিসার ইনচার্জ। আর সদস্য সচিব করা হয়েছে উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তাকে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাঠানো চিঠিতে সংশ্লিষ্ট কমিটিকে নিয়ে ভোটকেন্দ্রে তালিকা করতে একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে ইসি। এতে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের জন্য ১৬ আগস্ট, সেই তালিকার ওপর দাবি-আপত্তি নেওয়ার শেষ সময় ৩১ আগস্ট, দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তির শেষ সময় ১১ সেপ্টেম্বর ও খসড়া ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের জন্য ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছ। আর খসড়া ভোটকেন্দ্রে চূড়ান্ত তালিকা ইসি সচিবালয়ে ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পাঠাতে বলেছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর এ বিষয়ে বলেছেন, মাঠ পর্যায় থেকে পাঠানো তালিকা যাচাই বাছাই করে চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।
ইতোমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আগামী অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ বা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের দিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। আর নির্বাচন হবে আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, তফসিল ঘোষণার আগের ভোটকেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করতে হয়। হাতে সময় আছে তিন মাসের মতো। তাই এখন থেকেই ভোটকেন্দ্র স্থাপনের কার্যক্রম হাতে না নিলে সময় সংকুলান হবে না।
নীতিমালা অনুযায়ী- যাতায়াতের সুবিধা, ভবনের আয়ুষ্কাল, ভোটার বৃদ্ধি, সরকারি ভবনকে প্রাধান্য দেওয়া, প্রভাবাধীন বা উন্মুক্ত নয় এমন স্থানে ভোটকেন্দ্র না করা, রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের নামে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানে ভোটকেন্দ্র না করা, শারীরিকভাবে পিছিয়ে পড়াদের কথা বিবেচনায় নিয়ে ভোটগ্রহণ স্থাপন প্রভৃতি বিষয় আমলে নিতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় হলে যেকোনো ভোটার দাবি-আপত্তি জানাতে পারবেন।