‘পরমাণু যুদ্ধের ঢোল আবারও বাজছে। অবিশ্বাস ও বিভাজন বাড়ছে। স্নায়ুযুদ্ধের কারণে যে পারমাণবিক ছায়া নেমে এসেছিল তা আবার ফুটে ওঠেছে। কিছু দেশ আবারও বেপরোয়াভাবে পারমাণবিক স্যাবারকে ধাক্কা দিচ্ছে, এই সরঞ্জামগুলো ব্যবহার করার হুমকি দিচ্ছে। ধ্বংসের কথা বলছে।’
রোববার হিরোশিমার পারমাণবিক বোমা হামলার ৭৮তম বার্ষিকীর এক অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের এই বার্তা পড়ে শোনান সংস্থাটির আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি ইজুমি নাকামিৎসু। তাস।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়ংকর এ দিনটি স্মরণে পারমাণবিক অস্ত্র সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করারও আহ্বান জানান তিনি। বাণীতে আরও উল্লেখ করেছেন, ‘পরমাণু অস্ত্র নির্মূল করা জাতিসংঘের সর্বোচ্চ নিরস্ত্রীকরণ অগ্রাধিকার।’ ‘পরমাণু ঝুঁকি দূর করার একমাত্র উপায় হলো পারমাণবিক অস্ত্র নির্মূল করা’, জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘পরমাণু ছায়া একবার ও চিরকালের জন্য তুলে না নেওয়া পর্যন্ত আমরা বিশ্রাম নেব না।’ তবে বোমা হামলার জন্য দায়ী দেশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের কথা উল্লেখ করেননি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে বিশ্ব ইতিহাসে প্রথম পারমাণবিক বোমা হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। জাপান সাম্রাজ্যের আত্মসমর্পণকে ত্বরান্বিত করার একটি উপায় হিসেবে বোমা হামলাগুলোকে তারা ন্যায্যতা দেয়। মানবতার ইতিহাসে সামরিক সংঘর্ষে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার একমাত্র উদাহরণ এই হামলা। ১৯৪৫ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় এদিন হিরোশিমা শহরের দুনিয়ার প্রথম আনবিক বোমা হামলা হয়। রোদঝলমল সকালে এ হামলায় মুহূর্তে শহরটিতে নেমে আসে এক মহাপ্রলয়। ‘লিটল বয়’ নামের এ মার্কিন আণবিক বোমা হামলায় মুহূর্তে প্রাণ হারান ৮০ হাজার নিরপরাধ সাধারণ মানুষ। পরে তেজস্ক্রিয়তায় মারা যান আরও হাজার হাজার মানুষ। আরব নিউজ।
দিনটি উপলক্ষ্যে হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই পারমাণবিক অস্ত্র ধ্বংস করার আহ্বান জানিয়েছেন। হামলার সময় সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে শান্তিঘণ্টা বেজে উঠে হিরোশিমার শান্তি পার্কের স্মৃতিসৌধে। সেখানে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ সমবেত হন। নিহতদের স্মরণে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদা এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। হিরোশিমা হামলার তিন দিন পর ৯ আগস্ট নাগাসাকিতে আনবিক বোমা হামলা চালানো হয়।