আঞ্চলিক ভারসাম্য রক্ষার কারণেই অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসের সদস্য এবার হতে পারেনি বাংলাদেশ- এমনটাই জানালেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তবে আগামীতে জোটের সদস্য পদ পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
পররাষ্ট্র সচিব জানান, ব্রিকসে সদস্য না হওয়ায় আশাহতের তেমন কিছু দেখছি না। আমাদের আরও সময় আছে।
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে ব্রিকসে বাংলাদেশের যুক্ত হতে না পারা নিয়ে এমন মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র সচিব।
এবার ব্রিকসে বাংলাদেশের আমন্ত্রণ পাওয়া নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকরা আশাবাদী ছিলেন। ব্রিকসে ইথিওপিয়ার মতো একটি দেশের আমন্ত্রণ পাওয়া নিয়ে সরকারে মূল্যায়ন জানতে চাওয়া হলে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এখানে রাজনৈতিক এবং আঞ্চলিক অনেক ইস্যু আছে। এখানে ভারসাম্য করার একটা ব্যাপার আছে। লাতিন আমেরিকা থেকে একজন, নর্থ আফ্রিকা থেকে একজন আবার মধ্যপ্রাচ্য থেকেও নিয়েছে। সুতরাং তারাও জিওগ্রাফিক্যাল একটা ব্যালেন্স করার চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের পাশে আরও দেশ ছিল। যারা আগ্রহী ছিল। তারা পায়নি। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। রাজনৈতিক পর্যায়ে বলতে পারেন, আমরা ছয়জনের মধ্যে এবার ছিলাম না কিন্তু আমরা ব্রিকসের রিয়েল যে আউটরিচটা (নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক) আছে, ওটার মাধ্যমে আমাদের লাভবান হওয়ার সুযোগটা আছে। সেটাতে আমরা আছি।
পরবর্তী ধাপে বাংলাদেশ ব্রিকসে যুক্ত হতে পারার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এবার ব্রিকস সম্মেলনে সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট তার বক্তব্যে বলেছেন, এটা প্রথম ধাপ। পরবর্তীতে আরও ধাপ আসবে। আমরা আশা করছি যে, পরবর্তী ধাপে হবে। ইতোমধ্যে আমরা একটু সময় পেলাম।
তিনি বলেন, সবাই যেভাবে বলছিল- ব্রিকস জি-৭ বা পশ্চিমা অর্থনীতির বিকল্প প্ল্যাটফর্ম হবে, ব্যাপারটা কিন্তু এতটা সহজ না। এবার কিন্তু আমরা সে ধরনের কিছু দেখিনি। ব্রিকসের তো ১৫ বছর হয়ে গেল। সুতরাং টেনজিবল আউটকামের দিকে যদি আপনারা দেখনে, একমাত্র এনডিবি ছাড়া তেমন একটা চোখে পড়েনি। সুতরাং আমরা এনডিবির পার্ট আছি, এখানে আশাহতের তেমন কিছু দেখছি না। সুতরাং আমাদের আরও সময় আছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। তিনি বাংলাদেশ সফরে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এনডিবির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলাপ হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। উনি বাংলাদেশে আসার কথা বলেছেন। আগামী মার্চ মাসে হয়তো আসবেন। আমাদের সঙ্গে অনেক প্রজেক্ট তিনি করবেন।
সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর
এদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের বাংলাদেশ সফরের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
তিনি বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়েছে; কিন্তু আনুষ্ঠানিক আলোচনার প্রেক্ষাপটে নয়। তার আসার একটা সম্ভাবনা তো আছে। টাইমিং নিয়ে আমরা কাজ করছি।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, দুই দিনের সফরে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসবেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ। সেক্ষেত্রে এটি হবে রাশিয়ার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম বাংলাদেশ সফর। আগামী সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জি-২০ সম্মেলন। সেখানে যোগ দেবেন ল্যাভরভ। ঢাকা হয়ে দিল্লিতে যাবেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।