জাতীয়

আমাদের ইজ্জত-সম্মান অনেক বেড়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, অনেক দেশ আমাদের নিয়ে টানাটানি করে, কিন্তু আমরা কারো লেজুড় হতে চাই না। আমরা গরিব হতে পারি, কিন্তু সম্মান বজায় রাখি।

সে জন্য আমাদের ইজ্জত-সম্মান অনেক বেড়েছে।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সিলেট নগরে নিজ বাসভবন হাফিজ কমপ্লেক্সে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ইইউ প্রতিনিধিদলে ছিলেন রেবেকা কক্স ও শার্লোট সুয়েবেস।

সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য প্রার্থী এ কে আব্দুল মোমেন আরও বলেন, ইইউ পর্যবেক্ষক দলকে বললাম আগামী দিনে কী চাই। আমরা বলেছি, একটা ব্যালেন্সড ফরেন পলিসি চাই। অবাধ, সুষ্ঠু ও  নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যা যা দরকার, সব করেছি। এজন্য চাই দুনিয়ার সব লোক এসে দেখুক শিখুক। প্রধানমন্ত্রী দেশে অনেক সুন্দর নির্বাচন করছেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইশতেহার ইস্যুতে বলেছেন, আমরা কী কী চাই। শান্তি চাই, বাকস্বাধীনতা চাই, স্থিতিশীলতা চাই, জনগণের কর্মসংস্থান চাই, ইউনিভার্সাল হেলথ সেক্টর চাই, একটি সোনার বাংলাদেশ তথা স্মার্ট সিটিজেন বাংলাদেশ চাই। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমার স্বপ্ন একটাই, আমার বাবার স্বপ্ন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র দেশ, যেখানে তিন মিলিয়ন (৩০ লাখ) মানুষ জীবন দিয়েছেন গণতন্ত্রের জন্য, স্বাধীনতার জন্য, মানবাধিকার ও মানুষের ন্যায়বিচারের জন্য। আমরা নির্বাচনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই যে -আমরা হচ্ছি পৃথিবীর মধ্যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। আমরা মানবাধিকার ও মানুষের ন্যায়বিচারের অগ্রনায়ক। এ জন্য অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চাই।

তিনি বলেন, আগে বিএনপির সময়ের আজিজ মার্কা নির্বাচনে এক কোটি তেইশ লাখ ভোট ভুয়া ছিল। আমরা বায়োমেট্রিক করেছি, এবার কোনো ভোট ভুয়া হবে না। বলা হয়েছে, রাতের অন্ধকারে ভোট দেওয়া হয়েছে। আমরা এবার ট্রান্সপারেন্ট ব্যালট বাক্স রেখেছি, সবার সামনে থাকবে, দেখবে কয়টা ব্যালট পড়বে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমরা একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন করেছি। কমিশন নির্বাচনের সব দায়িত্বে থাকবে; সরকারি অফিসার, পুলিশ সবাইকে কাজে লাগাতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী গত ১৫ বছরে সর্ব শ্রেণির জন্য মঙ্গল করেছেন। এখন হরতাল নেই, অবরোধ নেই, যারা ব্যবসায়ী, তারা সুন্দর ব্যবসা করছেন। যারা অভিভাবক, তারা খুশি, সেশনজট নেই, বোমাবাজি নেই, তার সন্তান ফিরে আসবে কি না, সেই আতঙ্ক নেই। আর যারা গরিব লোক, তাদের শেখ হাসিনার সরকার অনেক ধরনের অনুদান দেয়। আমরা খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিলাম, এখন খাদ্য ঘাটতি নেই।

মোমেন বলেন, তারা (ইইউ পর্যবেক্ষকদল) প্রশ্ন করেছিলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী আছেন কি না। বললাম আরও চারজন আছেন। আমরা কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীকে ছোট করে দেখি না। আমরা আমাদের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। তারা তাদের মতো করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বললাম, আমাদের শহর সম্প্রীতির শহর। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি, তাদের সঙ্গেও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক। তাদের সঙ্গে ঝগড়া ও মারামারি নেই। আমরা সমাজের লোক হিসেবে স্যাক্রিফাইস করি।

তিনি বলেন, আমি তাদের বলেছি, সিলেটে মেয়র ছিলেন বিএনপির। আমরা তার সঙ্গে কোনো বাজে ব্যবহার করিনি। আমাদের সরকার তাকে সব সময় সাহায্য করেছে। শেখ হাসিনা চান দেশের মঙ্গল। সুতরাং বিএনপি করল, না আওয়ামী লীগ করল, তা তিনি দেখেননি। কারণ তিনি দেশের উন্নয়ন চান। নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো পর্যবেক্ষণ ছিল না। তবে আমি বলেছি, আমাদের লোক এবং অন্য দলের একজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন।

বিএনপির অভিযোগ সম্পর্কে মোমেন বলেন, আমরা কোনো নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করিনি। যারা সন্ত্রাসের সঙ্গে  জড়িত, সিসি ক্যামেরায় ছবি উঠেছে, কেবল ক্রিমিনাল যারা, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজনৈতিক কারণে একজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়নি। আমরা সন্ত্রাসীদের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতির কথা বলেছি। বিএনপির অনেক নেতা আছেন, যারা গাড়ি জ্বালান, হুকুম দেন জ্বালানোর, চিহ্নিত যারা, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে ইইউ পর্যবেক্ষকরা নিজস্ব পর্যবেক্ষণের কোনো বিষয়ে কথা বলেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *