খেলাধুলা

শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে সুপার ওভারে হেরে বিদায়ের শঙ্কায় পাকিস্তান

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের তুলনামূলক দুর্বল দল যুক্তরাষ্ট্র। দলটির নিজস্ব কোনো খেলোয়াড় নেই। বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটারদের নিয়ে দল গঠন করেছে বিশ্বকাপের সহ আয়োজক দেশটি।

আইসিসির এই সহযোগী দলটির বিপক্ষে লড়াই করেও জিততে পারেনি সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান। শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ের ম্যাচে সুপার ওভারে হেরে যায় পাকিস্তান। এই পরাজয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চলমান নবম আসর থেকে বিদায়ের শঙ্কায় পড়ে গেল বাবর আজমরা।

আগামী পরশু রোববার চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। সেই ম্যাচে হেরে গেলেই গ্রুপপর্ব থেকে পাকিস্তানের বিদায় নিশ্চিত হয়ে যেতে পারে।

বিশ্বকাপের ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানের সঙ্গে শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই করেছে যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট দল। শেষ বলে যুক্তরাষ্ট্রের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫ রান। হারিস রউফের করা ইনিংসের একিবারে শেষ বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ টাই করেন নীতিশ কুমার।

শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ের পর ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সুপার ওভারে দলের সেরা পেস বোলার মোহাম্মদ আমিরের হাতে বল তুলে দেন পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। সুপার ওভারে ১৮ রান খরচ করে ১ উইকেট শিকার করেন মোহামবমদ আমির।

সুপার ওভারে জয়ের জন্য পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৯ রান। প্রথম বলে কোনো রান নিতে পারেননি ইফতেখার আহমেদ। দ্বিতীয় বলে হাঁকান বাউন্ডারি। পরের ডেলিভারিতে ওয়াইড। তৃতীয় বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন ইফতেখার আহমেদ।

জয়ের জন্য শেষ তিন বলে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৪ রান। পাকিস্তান শেষ তিন বলে ৮ রানের বেশি করতে পারেনি। সুপার ওভারে পাকিস্তান করে এক উইকেট হারিয়ে ১৩ রান। ৫ রানের জয়ে সুপার এইটে ওঠার পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল যুক্তরাষ্ট্র।

এর আগে বিশ্বকাপের চলতি আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে ১৯৫ রানের বিশাল টার্গেট তাড়া করে দাপুটে জয় পায় যুক্তরাষ্ট্র। আজ পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকে চমকিয়ে দিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার পথে একধাপ এগিয়ে গেল যুক্তরাষ্ট্র।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের গ্রান্ড প্যারিস স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যাওয়া পাকিস্তান, শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান করতে সক্ষম হয়েছে। টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান করে ম্যাচ টাই করে যুক্তরাষ্ট্র।

প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলেই আউট হন তারকা ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ান। তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে ফেরেন ওয়ান ডাউনে ব্যাটিংয়ে নামা উসমান খান। এরপর ৪.৪ ওভারে স্কোর বোর্ডে মাত্র ২৬ রান জমা হতেই তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন তারকা ব্যাটসম্যান ফখর জামান।

মাত্র ২৬ রানে প্রথম সারির ৩ ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। দলকে খেলায় ফেরাতে চেষ্টা করেন অধিনায়ক বাবর আজম ও সহঅধিনায়ক শাদাব খান। চতুর্থ উইকেটে তারা ৪৮ বলে ৭২ রানের জুটি গড়েন।

এরপর কোনো রান যোগ করার আগেই সাজঘরে ফেরেন শাদাব খান ও আজম খান। শাদাব খান ২৫ বলে এক চার আর ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৪০ রান করলেও শূন্য রানে ফেরেন আজম খান।

দলের এই ব্যাটিং বিপর্যয়ে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করেন অধিনায়ক বাবর আজম। ১৫.৫ ওভারে দলীয় ১২৫ রানে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন তিনি। তার আগে ৪৩ বলে দুই চার আর তিন ছক্কায় মাত্র ৪৪ রান করেন বাবর। এই রান করার পথেই ভারতীয় তারকা ক্রিকেটার বিরাট কোহলিকে ছাড়িয়ে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড গড়েন বাবর।

১২০ বলে ১৬০ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে এক উইকেটে ১০৪ রান করে জয়ের পথেই ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এরপর মাত্র ৭ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট হারালে রান তোলার গতি কমে যায়।

কিন্তু দলকে জয় উপহার দিতে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন মোনাঙ্ক প্যাটেল। তিনি ৩৮ বলে ৭টি চার আর এক ছক্কায় ৫০ রান করে ফেরেন। ২৬ বলে ৩৫ রান করেন আন্দ্রেস গৌস। ২৬ বলে ৩৬ রানে অপরাজিত ছিলেন অ্যারন জোন্স। আর ১৪ বলে ১৪ রান করে অপরাজিত থাকেন নীতিশ কুমার। তিনি শেষ বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ টাই করেন। তখন ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে সুপার ওভারে জয় পায় যুক্তরাষ্ট্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *