বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষাসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে সরকারি কর্মকমিশনের (বিপিএসসি) ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তাসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
রোববার রাতে বেসরকারি টেলিভিশন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর সাঁড়াশি অভিযানে নামে সিআইডি। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন-পিএসসি উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর, নোমান সিদ্দিকী, পিএসসির অবসরপ্রাপ্ত ড্রাইভার সৈয়দ আবেদ আলী, ডেসপাস রাইডার খলিলুর রহমান, অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম, আবু সোলায়মান মো. সোহেল, উপপরিচালক মো জাহাঙ্গীর আলম, পিএসসির সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, অডিটর প্রিয়নাথ বায়, মো. জাহিদুল ইসলাম, নিরপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন ও মো মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান, সাখাওয়াত হোসেন, সায়েম হোসেন, লিটন সরকার ও সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম।
লাখো চাকরিপ্রার্থীর ভরসার প্রতীক বিপিএসসির নিয়োগ পরীক্ষায় এমন জালিয়াতির খবর শিউরে ওঠার মতোই। তবে চাক্ষুষ সাক্ষীর তথ্যগুলো মিলিয়ে নিতে বেছে নেওয়া হয় ৫ জুলাই শুক্রবার অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলীর নিয়োগ পরীক্ষাটিকে।
প্রস্তুতি শেষে ছদ্মবেশী প্রার্থীকে তুলে দেওয়া হয় চক্রের সদস্যদের হাতে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত যে প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, হোয়াটসঅ্যাপে তার একটা কপি হাতে আসে অন্তত ১ ঘণ্টা আগে। আর অজ্ঞাত স্থানে রেখে চুক্তিবদ্ধ শিক্ষার্থীদের তা পড়ানো হয় আগের রাতেই।
প্রশ্নফাঁসের তথ্যের স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বিপিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম।
তিনি জানান, উপপরিচালক হক মোহাম্মদ আবু জাফর স্যার ২ কোটি টাকার বিনিময়ে ট্যাঙ্ক থেকে তাকে প্রশ্নপত্র দিয়েছেন। তিনি অবগত আছেন ৪৫তম বিসিএস প্রিলি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হয়েছে।
এদিকে, দীর্ঘ অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যে পুরো চক্রটিকে আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
প্রসঙ্গত, বিপিএসসির কতিপয় কর্মকর্তার নেতৃত্বে বিসিএসসহ অন্তত ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস করেছে চক্রটি। চাকরি পেয়েছে বহু অযোগ্য প্রার্থী। ফলে প্রজাতন্ত্রের কাজে দক্ষ ও উপযুক্ত কর্মচারী নিয়োগের যে উদ্দেশে গঠিত হয়েছিল সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠান, সেটিই এখন হুমকির মুখে।