রাজনীতি

শেখ হাসিনার পতনের পর ঘোষণা দিলেন লতিফ সিদ্দিকী

ছাত্রসমাজের আন্দোলনের মুখে সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশে ছেড়ে পালিয়ে যান ভারতে।  এরপরই নাজেহাল হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।   বর্তমানে অনেক মন্ত্রী এমপিরা আত্মগোপনে গেছেন আবার অনেকে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিচ্ছেন।

এদিকে সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী জীবনে আর কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

শনিবার বিকালে তার ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের সঙ্গে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মাওলানা ভাসানীর কবরে শ্রদ্ধা জানান। পরে সেখানে সমবেতদের উদ্দেশে বক্তৃতাকালে এ ঘোষণা দেন।

লতিফ সিদ্দিকী বলেন, আমি আজ মাওলানা ভাসানীর মাজারে এসেছি উপলক্ষ হিসেবে। লক্ষ্য হলো, ’৭১ এর স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে যে যুদ্ধ এখানে শুরু হয়েছিল এবং আজও এই বাংলার গণমানুষের, নিপীড়িত মানুষের, অধিকারবঞ্চিত মানুষের কণ্ঠস্বর হিসেবে যিনি পরিচিত, সেই বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, তাকে আমি সমর্থন করি। তার সঙ্গে আমৃত্যু আমি থাকব। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমি আর জীবনে সম্পৃক্ত হব না। মাওলানা ভাসানীর এই মাজারে দাঁড়িয়ে আমি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে টাঙ্গাইলবাসীর সমর্থনে, বাংলার মানুষের সমর্থনে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’

পরে তিনি জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলে বক্তৃতা শেষ করে বলেন, ‘মাওলানা ভাসানী আমাদের চিত্তকে শুদ্ধ করুন।’

প্রসঙ্গত, বর্ষীয়ান রাজনীতিক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসন থেকে ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ওই বছর সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে একটি সভায় বক্তৃতাকালে হজ ও তাবলিগ জামাত নিয়ে কটূক্তি করেন। পরে তাকে দল থেকে বহিষ্কার, মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ করা হয়। সংসদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেন।

সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হন।

শনিবার লতিফ সিদ্দিকীর বক্তৃতার পর তার ভাই কাদের সিদ্দিকী বক্তৃতাকালে কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমার বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী বলেন, তিনি আর রাজনীতি করবেন না। আমি তোমাদের বলছি, আমার শেষ শ্বাস যেন রাজনীতি করতে করতেই বের হয়ে যায়।’

এ সময় তাদের ছোট ভাই কালিহাতী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আজাদ সিদ্দিকীসহ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *