রাজনীতি

সরকারি ডাটা কালিয়াকৈর মেগা ডাটা সেন্টারে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত

সরকারি সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ডাটা আলাদা সার্ভারে না রেখে নিরাপত্তার স্বার্থে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মেগা ডাটা সেন্টারে সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত দিয়েছে সরকার।

এই ডাটা সেন্টারে ব্যক্তিগত ডাটাও সংরক্ষণের সুযোগ রেখে বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড শীর্ষক কোম্পানির মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন এবং আর্টিক্যাল অব অ্যাসোসিয়েশনের সংশোধিত খসড়ার ভূতাপেক্ষ অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার (৭ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্যুম্য়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে নীতিমালাটি অনুমোদন দেওয়া হয়। গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের একটা করে সার্ভার করে, এখন থেকে কেউ আর সার্ভার করতে পারবে না। সবার ডাটা এই কালিয়াকৈর ডাটা সেন্টারে কোম্পানির আন্ডারে স্টোর করতে হবে। কারণ ওখানে সব সেফটি ও সিকিউরিটি থাকবে। সরকরের কোনো ডাটা আর লোকালি কেউ স্টোর করতে পারবে না।

‘সবাইকে কালিয়াকৈর সেন্ট্রাল ডাটা সেন্টার হচ্ছে সেখানে স্টোর করতে হবে। এটা খুব বড় একটা কাজ হবে। এটার একটা সুবিধা হচ্ছে, এর একটা ব্যাকআপ আছে যশোরে। কোনো কারণে যদি কালিয়াকৈরে ডিজাস্টারও হয়, সব ডাটা আবার যশোরের ব্যাকআপ সেন্টার থেকে উদ্ধার করা যাবে। ’

সবার ডাটা কালিয়াকৈরে ডাটা সেন্টার রাখার নির্দেশনা ছিল কিন্তু সেটা পুরোপুরি মানা হতো না জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সম্প্রতি আমরা দেখলাম কিছু কিছু বড় বড় ডাটা ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু ওটা যেহেতু মেগা সেন্টার, এখন থেকে সব সরকারি ডাটা রাখতে হবে। ৩০০ টেরাবাইট পর্যন্ত ডাটা ওখানে স্টোর করা যাবে। এখন পর্যন্ত ৭ টেরাবাইট পর্যন্ত করা গেছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ইউরোপীয় একজন বড় তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ দেখে গেছেন। তিনি বলেন, ইউরোপেও এত বড় ডাটা সেন্টার নেই। আমাদের ডাটাও এখানে স্টোর করবো।

বেসরকারি বা ব্যক্তি পর্যায়ের ডাটাও সেখানে সংরক্ষণ করা যাবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি জানান, প্রাইভেট সেক্টরের লোকজন অন-পেমেন্টে ডাটা সংরক্ষণ করতে পারবে। নিজেদের আর সার্ভার করার দরকার হবে না। এই ডাটা সেন্টারে যারা ডাটা সংরক্ষণ করবেন ওই ডাটা সেন্টারের মালিকও ঢুকতে পারবে না, বুঝতেও পারবে না, কিছুই করতে পারবে না। যিনি স্টোর করবেন কেবল তারই এন্ট্রি থাকবে ডাটা সেন্টারে।

ডাটার নিরাপত্তা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও জানান, আপনি আপনার বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানে যদি একটা ডাটা সেন্টার করেন, আপনাকে ভেন্ডর আনতে হবে। সেই ভেন্ডর আপনারা ডাটা সেন্টারে ঢুকবে, আপানার স্টোরে ঢুকবে, আপনি যতই বলেন কাজ করার সময় তাকে ফ্রি এন্ট্রি দিতেই হবে। সেজন্য এগুলোর সেফটি-সিকিউরিটি ঠিক থাকে না।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আমরা কয়েক মাস ধরে এগুলো হ্যান্ডেল করতে গিয়ে দেখছি, অনেক জায়গা থেকে টাকা চাচ্ছে। এমনকী একশ কোটি টাকাও চাওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যত ডাটা আছে সবগুলো আইসিটি (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি) বিভাগের অধীন কালিয়াকৈরে মেগা ডাটা সেন্টারে লঞ্চ করার জন্য প্রস্তাব এসেছে। সবার ডাটা এখানে রাখাতে হবে, এমনকী বিদেশিদেরটাও রাখতে পারবে। কিন্তু সেটার জন্য প্রথম একটা অরপারেটিং ফান্ড দিয়ে দিচ্ছে। এরপর থেকে সরকার টাকা দেবে না। তারাই ডাটা স্টোর করে যে টাকা-পয়সা পাবে সেটা দিয়েই মেইনটেইন করবে এবং ভাবিষ্যতে এক্সটেনশন করবে। কিন্তু এটার জন্য বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি করতে হবে, আর্টিক্যাল অব অ্যাসোসিয়েশসন লাগবে।

তিনি বলেন, গত ফেব্রুয়ারি-মার্চে এটা যখন আসছিল, ওই সময় অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে কিছু আপত্তি দেওয়া হলো। যেহেতু টাকাটা বাংলাদেশ দিচ্ছে, সেজন্য কোম্পানির মালিক কম্পিউটার কাউন্সিল হতে পারবে না, এটা সরকার হতে পারবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, শুরুতে অপারেটিং ফান্ড যেটা ছিল সেটা কম ছিল, ১০ কোটি। সেটাকে ৫০ কোটি টাকা করা হয়। এগুলোর বিষয়ে কিছু কিছু লিগ্যাল আপত্তি ছিল, সেগুলো ফিন্যান্স থেকে ওয়ার্কঅ্যাবল করে দিয়েছি। এখন এটা নিয়ে আসা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *