এই ডিসেম্বরে বলিউডে চার বছর পূর্ণ হবে সানিয়া মালহোত্রার। গত চার বছরে ধীরে ধীরে নিজেকে একজন ভার্সেটাইল অভিনেত্রী হিসেবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে সমর্থ হয়েছেন ২৮ বছর বয়সী এই মেধাবী তরুণী। ‘দঙ্গল’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে সানিয়ার আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল অভিনেত্রী হিসেবে। নারী কুস্তিগীর ববিতা কুমারির ভূমিকায় রূপালি পর্দায় তার অভিষেক ছিল দর্শকদের জন্য দারুণ এক চমক।
সুপারস্টার আমির খানের সঙ্গে ক্যারিয়ারের শুরুতে অভিনয়ের সুযোগ লাভ সানিয়ার জন্য চমত্কার একটি অভিজ্ঞতা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে আজও। অভিনীত চরিত্রটিকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে তাকে এবং তার বোনের ভূমিকায় রূপদানকারী আরেক তন্বী অভিনেত্রী ফাতিমা সানা শেখকে প্রশিক্ষকের কাছে কুস্তির প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে অভিনয়ের আগে। ‘দঙ্গল’ ছবিতে সানিয়া এবং ফাতিমা সানা শেখ উভয়েই সুঅভিনয়ের জন্য উচ্চপ্রশংসা লাভ করেন।
‘দঙ্গল’র পর গত কয়েক বছরে সানিয়াকে ‘পটাকা’, ‘বাঁধঘাই হো’, ‘ফটোগ্রাফ’, ‘শকুন্তলা দেবী’ এবং ‘লুডো’ ছবিতে দেখা গেছে। মজার ব্যাপার হলো, অভিনীত ছবিগুলোতে বিচিত্র চরিত্রে পর্দায় হাজির হয়েছেন সানিয়া। একটির সঙ্গে আরেকটির কোনোভাবেই মিল নেই। অভিনীত প্রতিটি চরিত্র রূপায়নে তার আন্তরিকতা, নিষ্ঠা, পরিশ্রম এবং সিরিয়াস মনোভাব ছবিগুলোর নির্মাতা ও সহশিল্পীদের মুগ্ধ করেছে।
‘পটাকা’ ছবিতে প্রত্যন্ত গ্রামের দুই ঝগড়াটে বোনের গল্প তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে সানিয়া মালহোত্রা এবং রাধিকা মদনকে দুই বোনের ভূমিকায় দেখা গেছে। রাজস্থানের প্রত্যন্ত গ্রামের পটভূমিকায় গড়ে ওঠা গল্পের ছবিতে অভিনয়ের আগে সানিয়া সেখানকার গ্রামের নারীদের সঙ্গে থেকে তাদের কথাবলার ভঙ্গি উচ্চারণ ইত্যাদি রপ্ত করেছেন, শরীরের ওজন বাড়িয়েছেন, মাথায় ও কাঁধে পানিভর্তি কলসি নিয়ে কয়েক মাইল পথ হাঁটার অভ্যেস রপ্ত করেছেন। ফলে ‘পটাকা’ ছবিতে সানিয়ার অভিনয় ব্যাপক প্রশংসা লাভ করেছে সমালোচকদের।
একইভাবে ‘ফটোগ্রাফ’, ‘বাঁধঘাই হো’, ‘শকুন্তলা দেবী’ এবং ‘লুডো’ ছবিগুলোর কথা বলা যায়। সর্বশেষ মুক্তি পেয়েছে ‘লুডো’। এখানেও সানিয়া বাজিমাত করেছেন। বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ প্রণয়ের দৃশ্য সম্বলিত ভিডিও টেপ ফাঁস হয়ে যাওয়া এক তরুণীর ভূমিকায় তার অভিনয়ে অসাধারণত্ব ছিল।
‘লুডো’ ছবিতে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে সানিয়া বলেন, ‘মেধাবী ও গুণী চিত্রনির্মাতা অনুরাগ বসুর সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমাদের জন্য নির্ধারিত কোনো স্ক্রিপ্ট ছিল না ‘লুডো’ ছবিতে। কেবলই স্টোরি লাইনটা আগে থেকে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শুটিংয়ের জন্য ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর সময় পরিচালক অনুরাগ দাদা আমাদের প্রত্যেক শিল্পীকে নিজের মতো করে ইমপ্রোভাইজ করে নিতে বলতেন। আমি ব্যাপারটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছিলাম। ফলে কাজটি হয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের।’
সানিয়া মালহোত্রা নিজে একজন উত্তর ভারতীয় হলেও সম্প্রতি কাজ শেষ করেছন একটি দক্ষিন ভারতীয় তেলেগু সিনেমার। যেখানে তাকে সদ্য বিবাহিত এক দক্ষিন ভারতীয় তেলেগু মেয়ের চরিত্রে দেখা যাবে।
এছাড়াও বর্তমানে অভিনয় করছেন ‘পাগলিয়াত’ এবং ‘লাভ হোস্টেল’ ছবি দুটিতে। প্রথম ছবিটি কমেডি ধাঁচের, যা প্রযোজনা করেছেন একতা কাপুর তার বালাজি মোশন পিকচার্সের ব্যানারে। দ্বিতীয় ছবিটি ‘লাভ হোস্টেল’ এর প্রযোজক শাহরুখ খান। এ ছবিটি হরর ধাঁচের। সানিয়া নিজে একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী। অভিনয়ের পাশাপাশি নাচটাও তার ভীষণ প্রিয়। আগামীতে নাচনির্ভর ছবিতে নৃত্যশিল্পীর ভূমিকায় অভিনয়ের প্রবল ইচ্ছা তার।