দেশের নাগরিকদের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, দেশ ও জনগণের উন্নয়ন রাজনৈতিক নেতৃত্বের একক দায়িত্ব নয়। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে এটা আমাদের সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য।
স্বাধীনতা মানুষের অধিকার, তবে স্বাধীনতা ও স্বেচ্ছাচারিতাকে ‘এক করে দেখলে চলবে না’- সেটিও মনে করিয়ে দেন রাষ্ট্রপতি। আরও বলেন, অধিকারকে অর্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে তা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলেই স্বাধীনতা অর্থবহ হয়ে ওঠে। আবার অধিকারের অপপ্রয়োগ স্বাধীনতাকে খর্ব করে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে দশ দিনব্যাপী আয়োজিত ‘মুজিব চিরন্তন’ অনুষ্ঠানের শেষ দিনে শুক্রবার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, আজকের দিনটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের, গর্বের ও সম্মানের। কারণ ১৯৭১ সালে মার্চের এই দিনের প্রথম প্রহরেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু এই স্বাধীনতা একদিনে বা হঠাৎ করে আসেনি। অনেক ত্যাগ আর রক্তের বিনিময়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। তাই স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে, অর্থাৎ স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সবাইকে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সমর্থন ও সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন আবদুল হামিদ। একইসঙ্গে দেশটির সঙ্গে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর মর্যাদাপূর্ণ নিষ্পত্তির প্রত্যাশা করেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, গৌরব ও ত্যাগের অনুপম বীরত্বগাথা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস। আমরা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় অর্জনকারী জাতি। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে দাঁড়িয়ে আমরা উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সুবর্ণ আলো দেখতে পাই। জাতির পিতার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার পথে এগিয়ে যাব- মুজিব জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর শুভক্ষণে এটাই হোক সবার চাওয়া-পাওয়া।