রাজধানী ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জ ও সাভারে ১০২৪টি দোকানে জরিপ চালিয়ে ৮৮ শতাংশেরই ভ্যাট নিবন্ধন না পাওয়ার কথা জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
চলমান একটি জরিপের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার এসব তথ্য জানিয়ে অধিদপ্তর বলেছে, বাকি ১২ শতাংশ ব্যবসায়ীর দেওয়া ভ্যাটও বাস্তবতার সঙ্গে ‘সঙ্গতিপূর্ণ নয়’।
শুক্রবার ভ্যাট গোয়েন্দা তদন্ত অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাদের তিনটি দলে ৪২ জন গোয়েন্দা আটটি মার্কেটে জরিপ চালিয়েছেন।
জরিপে মোট এক হাজার ২৪টি দোকানের তথ্য নেওয়া হয়। এর মধ্যে মাত্র ১২০টি দোকানের ভ্যাট নিবন্ধন পাওয়া যায়। বাকি ৯০৪টি দোকান নিবন্ধন ছাড়াই ব্যবসা করে আসছে।
“অনেক দোকানি ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবসা করছেন। নতুন ভ্যাট আইনও বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে দুই বছর আগে। কিন্তু ৮৮ শতাংশ দোকান ভ্যাটের আওতায় আসেনি।”
অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তানভীর আহমেদ নারায়ণগঞ্জে, সহকারী পরিচালক মুনাওয়ার মুরসালীন ঢাকায় এবং সহকারী পরিচালক মালেকীন নাসির আকন্দ সাভারের জরিপ কাজে নেতৃত্ব দেন।
জরিপে যে ১২০টি দোকানের ভ্যাট নিবন্ধন পাওয়া গেছে, তার মধ্যে মাত্র ৪৫টি মাসে ৫ হাজার টাকার বেশি ভ্যাট দেয়।
বাকি ৭৫টি দোকান ভ্যাট দেয় ৫ হাজার টাকার নিচে, যা তাদের দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন, বিদ্যুৎ ও অন্যান্য খরচ এবং মুনাফার সঙ্গে ‘সঙ্গতিপূর্ণ নয়’ বলে মনে করছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এদের প্রায় সকলে ক্রেতার নিকট হতে ভ্যাট আদায় করে। কিন্তু তারা যথাযথভাবে সরকারের কোষাগারে ভ্যাট পরিশোধ করে না।”
নারায়ণগঞ্জের মার্ক টাওয়ার, সমবায় নিউ মার্কেট, সায়েম প্লাজা, আল হাকিম (পপুলার) সেন্টার; সাভারের সিটি সেন্টার; ঢাকার ট্রপিকাল আলাউদ্দীন টাওয়ার উত্তরা, আরএকে শপিং কমপ্লেক্স উত্তরা এবং সুবাস্তু নজর ভ্যালি, বাড্ডা এই আটটি মার্কেটে এ জরিপ চালানো হয়।
এরমধ্যে সুবাস্তু নজর ভ্যালিতে ঢাকা উত্তর কমিশনারেট থেকে বৃহস্পতিবার ৫০০ দোকানকে বাধ্যতামূলক নিবন্ধন দিয়ে তালিকাটি মার্কেটের নিচে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অধিদপ্তর জানিয়েছে।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা পর্যায়ক্রমে সারা দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন ভ্যাট আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে কাজ করছি। সেই লক্ষ্য পূরণে বর্তমান পরিস্থিতি কী তা জানতে এ জরিপ পরিচালনা করছি।”
ভ্যাট দিতে ঢাকার বাইরের ব্যবসায়ীদের ‘অনিহা বেশি’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, গত ২৫ মে নরসিংদীর স্টেশন রোডের ইনডেক্স প্লাজা ও জামান শপিং কমপ্লেক্সে দেখা গেছে, ২৩৭টি প্রতিষ্ঠানের কোনোটাই ভ্যাট দেয় না।
“সারাদেশে, বিশেষ করে মার্কেটভিত্তিক দোকানগুলোকে আমরা নতুন ভ্যাট আইনের আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।”
জেলা পর্যায়ের মার্কেটগুলোতেও জরিপ পরিচালনার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে মইনুল খান বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তারা এ কাজে জনবল বাড়াতে বলবেন।