গত এক সপ্তাহ ধরেই দাউ দাউ করে জ্বলছিল সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী জাহাজ এক্স-প্রেস পার্ল। শ্রীলংকা উপকূলে বিশাল এই পণ্যবাহী জাহাজটিতে আগুন লেগে গিয়েছিল। এবার সেই জাহাজের তেল আর ধ্বংসাবশেষ ভেসে এসে সয়লাব হল সমুদ্র সৈকত।
শ্রীলংকার পশ্চিম উপকূলের জনপ্রিয় পর্যটনস্থল ‘নেগোম্বো’র সৈকত ধ্বংসাবশেষে ছেয়ে যাওয়ার ছবি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এক্স-প্রেস পার্ল বহন করছিল বিভিন্ন রাসায়নিক ও প্রসাধন সামগ্রী। আট দিন ধরে জাহাজটি আগুনে পুড়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
দূর্ঘটনার কারণে সম্ভাব্য পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে উদ্ধার বিশেষজ্ঞ ও ভারতীয় নৌবাহিনীর সাথে মিলে আগুন নেভানোর কাজ করছে শ্রীলংকার নৌবাহিনী। তবে ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে উত্তাল সমুদ্রে উদ্ধারকাজ ঠিকমত চালানো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
জাহাজটি ডুবে গেলে শত শত টন তেলের কারণে বিপর্যয়ের মুখে পড়বে সাগরের নিচের জীব-বৈচিত্র্য। শ্রীলংকা বন্দর কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান দয়া রত্নায়েক বিবিসি-কে জানান, আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে এলেও প্রচণ্ড উত্তপ্ত থাকার কারণে জাহাজটির কাছে যেতে পারছে না উদ্ধারকারীরা।
শ্রীলংকার নৌবাহিনী জাহাজটিকে আরও গভীর সমুদ্রে নিয়ে যেতে চায় জানিয়ে রত্নায়েক বলেন, আগে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জাহাজটির গড়ন পরীক্ষা করে জানাতে হবে আদৌ সেটি গভীর সমুদ্রে নেওয়া সম্ভব কি না।
পর্যটন ছাড়াও নেগোম্বোর অন্যতম প্রধান আয়ের উৎস মাছ শিকার। তাই বিপুল পরিমাণ তেল সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এলাকাটির অর্থনীতি। এ মুহুর্তে এলাকাটিতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি আছে।
সৈকতে এরই মধ্যে তেল ছড়িয়ে গেলেও এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ধ্বংসস্তুপ। বিশেষ করে প্লাস্টিকের গুড়া। শ্রীলংকার পশ্চিম উপকূলজুড়ে অন্যান্য শহরেও ছড়িয়ে গেছে এই প্লাস্টিক।
সেনারা সৈকত পরিষ্কারের কাজে নেমেছেন। তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং একাজে কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন শ্রীলংকার সামুদ্রিক পরিবেশ সুরক্ষা কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান।