কোন সেবার বিপরীতে ব্যাংক কত মাশুল নিতে পারবে, তা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী রোববার থেকে নতুন এ মাশুল কার্যকর করবে ব্যাংকগুলো।
নতুন নির্দেশনার ফলে গ্রাহকরা জানতে পারবে, কোন সেবায় কত মাশুল। এতে ব্যাংক সেবার খরচ কমবে বলেও জানা গেছে।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাব খোলার সময় ৫০০ টাকা জমা দিলেই হবে। চলতি হিসাব খোলার সময় জমা দিতে হবে এক হাজার টাকা। তবে কৃষক, মুক্তিযোদ্ধাসহ বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হিসাব খোলার সময় কোনো টাকা জমা না দিলেও হিসাব খুলতে হবে। সঞ্চয়ী হিসাবে ছয় মাস পরপর মাশুল কাটতে পারবে ব্যাংক।
তবে ১০ হাজার টাকা আমানতে কোনো মাশুল আদায় করা যাবে না। ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত গড় আমানতে ১০০ টাকা, ২ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতে ২০ টাকা, ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতে ২৫০ টাকা ও ১০ লাখ টাকার বেশি আমানতে ছয় মাস পরপর ৩০০ টাকা কাটা যাবে। চলতি হিসাবে প্রতি ছয় মাসে ৩০০ টাকা এবং বিশেষ নোটিশ হিসাবে ৫০০ টাকা মাশুল আদায় করা যাবে।
গ্রাহকরা এক শাখা থেকে অন্য শাখায় হিসাব স্থানান্তরের সময় একই জেলার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা ও অন্য জেলার ১০০ টাকা মাশুল আদায় করা যাবে। বন্ধ হয়ে যাওয়া হিসাব নতুন করে চালাতে কোনো মাশুল নেওয়া যাবে না। চেক বইয়ের ক্ষেত্রে প্রকৃত খরচ আদায় করা যাবে, এমনকি হারানো গেলেও কোনো অতিরিক্ত খরচ নেওয়া যাবে না।
ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে দশমিক ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মাশুল আদায় করা যাবে, তবে তা কোনোভাবেই ১৫ হাজার টাকার বেশি হবে না। ৫০ লাখ টাকার বেশি ঋণের ক্ষেত্রে মাশুল হবে সর্বোচ্চ দশমিক ৩০ শতাংশ, তা কোনোভাবেই ২০ হাজার টাকার বেশি নয়। ঋণ আবেদন মাশুল নামে কোনো মাশুল আদায় করা যাবে না। কৃষি ও এসএমই খাতের ঋণ পুনর্গঠন মাশুল বাবদ সর্বোচ্চ দশমিক ২৫ শতাংশ আদায় করা যাবে, তবে তা ১০ হাজার টাকার বেশি হবে না।
শতভাগ নগদ মার্জিনে ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে প্রতি ত্রৈমাসিকে সর্বোচ্চ দশমিক ২৫ শতাংশ, ডেফার্ড ঋণপত্রের ক্ষেত্রে দশমিক ৫০ শতাংশ, সাইট ও ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে ত্রৈমাসিকে দশমিক ৪০ শতাংশ মাশুল আদায় করা যাবে। বৈদেশিক মুদ্রায় ডিমান্ড ড্রাফট ও টেলিগ্রাফিক ড্রাফট ও মেইল ট্রান্সফারের নথিপত্রের ক্ষেত্রে ১ লাখ টাকার সমপরিমাণ মুদ্রার ক্ষেত্রে ১০০ টাকা, ৫ লাখ টাকার ক্ষেত্রে ২০০ টাকা, ১০ লাখ টাকার ক্ষেত্রে ৩০০ টাকা এবং ১০ লাখ টাকার বেশি হলে ৫০০ টাকা আদায় করা যাবে। এসব আদেশ বাতিল হলে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা কাটা যাবে।
ব্যাংক নিজ উদ্যোগে বছরে দুবার গ্রাহকদের হিসাবের স্থিতি জানাবে। আমানত ও ঋণ হিসাব—উভয়ই এই স্থিতি নিশ্চিতকরণ সনদ পাবে। তবে গ্রাহক এর বেশি সনদ চাইলে প্রতিবার ১০০ টাকা মাশুল নিতে পারবে ব্যাংক। সচ্ছলতা সনদ দিতে ব্যাংক প্রতিবার সর্বোচ্চ ২০০ টাকা নিতে পারবে।
চেক ফেরতের ক্ষেত্রে প্রতিবার সর্বোচ্চ ৫০ টাকা নিতে পারবে। অর্থ প্রদান নির্দেশনা স্থগিত করতে প্রতিবার ১০০ টাকা ও তা বাতিল করতে ৫০ টাকা মাশুল নিতে পারবে ব্যাংকগুলো।
এক হাজার টাকা পে-অর্ডার দেওয়ার ক্ষেত্রে ২০ টাকা, এক লাখ টাকার ক্ষেত্রে ৫০ টাকা এবং এর বেশি টাকার পে-অর্ডার ক্ষেত্রে ১০০ টাকা আদায় করা যাবে। পে-অর্ডার বাতিল করতে চাইলে ব্যাংক ৫০ টাকা মাশুল নিতে পারবে।