বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্মদিন সংক্রান্ত সকল নথি আগামী ৬০ দিনের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
সকল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, পররাষ্ট্র সচিব, নির্বাচন কমিশনের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেয়।
জাতীয় শোক দিবসের ভাব-গাম্ভীর্যকে ‘বিকৃত ও ক্ষুণ্ন করায়’ এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্মদিন হিসেবে বিভিন্ন তারিখের উল্লেখ থাকায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিস্ক্রিয়তা কেন ‘আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বেআইনি’ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
স্বরাষ্ট্র সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার ও গুলশান থানার ওসিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। এ ছাড়া আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন শুনানিতে অংশ নেন।
আদেশের সময় বিএনপি নেতা মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রিট আবেদনটি করা হয়েছে, এটি গ্রহণযোগ্য নয়।”
বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক এম ইনায়েতুর রহিম তখন বলেন, “এটা রুল শুনানির সময় আমরা দেখব।”
গত আড়াই দশক ধরে খালেদা জিয়া ১৫ অগাস্ট তার জন্মদিন পালন করে আসছেন, যা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচনা রয়েছে।
বিভিন্ন নথিতে তার আরো জন্মদিনের হদিস পাওয়ায় কোনটি খালেদা জিয়ার প্রকৃত জন্মদিন তা নিয়ে বিতর্ক বহুদিনের। তার জন্মসাল নিয়েও দুই রকম তথ্য মিলেছে এর আগে।
হাই কোর্টে শুনানি শেষে বিপুল বাগমার পরে সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়ার জন্মদিন হিসেবে পাঁচটি তারিখ ব্যবহার করার কথা রিট আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, তার এসএসসির নম্বরপত্রে জন্ম তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৬। বিবাহ নিবন্ধনে জন্ম তারিখ লেখা রয়েছে ৯ অগাস্ট ১৯৪৪। ২০০১ সালে নেওয়া তার মেশিন রিডেবল পাসপোর্টে জন্ম তারিখ ৫ অগাস্ট ১৯৪৬। চলতি বছরের মে মাসে তার করোনাভাইরাস পরীক্ষার প্রতিবেদনে জন্ম তারিখ লেখা হয়েছে ৮ মে ১৯৪৬। আর তিনি জন্মদিন পালন করেন ১৫ অগাস্ট, জাতীয় শোক দিবসে।
“ফলে আদালত খালেদা জিয়ার জন্মদিন সংক্রান্ত সব রেকর্ড চেয়েছে। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে তা দাখিল করতে বলা হয়েছে বিবাদীদের,” বলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল।
খালেদা জিয়ার বিভিন্ন জন্মতারিখ ব্যবহারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে গত ৩১ মে হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মামুনুর রশিদ।