বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের করা অভিযোগ করেছে তা অসত্য, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যমূলক বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রোববার সকালে তাঁর সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।
প্রসঙ্গত, মানবাধিকার বিষয়ক দশটি আন্তর্জাতিক সংস্থার একটি মোর্চা শনিবার একটি যৌথ বিবৃতি পাঠায়, যেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো গ্রেফতারকৃত এবং সন্দেহভাজনদের নির্যাতন ও নিষ্ঠুর আচরণ করছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশে নিরাপত্তা হেফাজতে নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়, এই অভিযোগ কোনো বিশেষ মহলের ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতারই অংশ। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ কিংবা আদালতের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে বিদ্যমান বিধিবিধান মতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।’
বিভিন্ন সময়ে ঢালাওভাবে গুমের অভিযোগ করার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, পরবর্তীতে এসব মিথ্যা প্রমাণিত হয়, যা অতি সম্প্রতি দেখা গেছে।
তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে জনগণের সম্পদ বিনষ্টের সময়ে বাধা দিলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের উপর সরাসরি হামলার ছবিও দেখা যায়, দেখা যায় থানা আক্রমণসহ আগুন দেওয়ার ঘটনা।
সরকারি অফিসে হামলা চালিয়ে নথিপত্রে আগুন দেওয়ার ঘটনাও দেখা যায় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এসব ঘটনা মানবাধিকার সংগঠনগুলো বক্তব্য বিবৃতিতে কিছুই বলে না। আগুন সন্ত্রাসের শিকার হয়ে জীবন্ত মানুষ যখন দগ্ধ হয় তখন মানবাধিকার সংগঠনগুলো কোথায় থাকে?
তিনি বলেন, কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নিয়ে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে ঢালাও অভিযোগ প্রত্যাশিত নয়। হেফাজতের কোন অপরাধমূলক কাজ হলে নিজস্ব আইন অনুযায়ী নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের শাস্তির আওতায় আনার নজির রয়েছে এবং কাউকেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার জনমনে শান্তি ও স্বস্তি বিধানে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষার পাশাপাশি নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সরকারের অগ্রাধিকার। আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকে জনমানুষের অধিকার আদায়ে সাহসী ভূমিকা পালন করে আসছে।
সকল অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে, কাউকেই ছাড় দেওয়া হয় নাই জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সাম্প্রতিককালে আলোড়ন সৃষ্টিকারি ফেনীর নুসরাত, বরগুনার রিফাত শরিফ,কক্সবাজারে মেজর সিনহাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড এবং নারীর প্রতি অমর্যাদাকর প্রতিটি ঘটনায় সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, করোনাকালেও অর্থনৈতিক সূচক সমূহে ইতিবাচক ধারা এবং প্রবৃদ্ধি বিস্ময় জাগিয়েছে, যা অনেকের সহ্য হয় না। এ অব্যাহত অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মানবাধিকার সংগঠনের নামে দেশ ও সরকার বিরোধী এসব তৎপরতা পরিকল্পিত কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। এ ধরনের উদ্দেশ্যমূলক এবং একচোখা দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় বহনকারি বিবৃতি বাংলাদেশের ইমেজ নষ্ট করার সংঘবদ্ধ অপপ্রয়াস ছাড়া আর কিছুই নয়।