আফগানিস্তানের বিষয়ে চীনের জড়িত হওয়ার যে আগ্রহ তা ‘ইতিবাচক’ হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
তিনি বলেন, “আফগানিস্তানে চলমান সহিংসতার শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং সত্যিকারের প্রতিনিধিত্বশীল ও সবার অংগ্রহণমূলক একটি সরকার গঠনে চীন আগ্রহী হলেই বিষয়টি ইতিবাচক হতে পারে।”
বুধবার আফগান তালেবান প্রতিনিধিদলের চীন সফরের পরই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই মন্তব্য করলেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
আফগান তালেবান গোষ্ঠীর ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল চীনে দুই দিনের সফরে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে বৈঠক করেছে। আলোচনা হয়েছে শান্তিপ্রক্রিয়া ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে।
চীন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে দেশের পুনর্গঠন এবং শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় তালেবান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেই চীন আশা করে।
চীন ও তালেবান প্রতিনিধিদের বৈঠকের বিষয়ে বৃহস্পতিবার ভারত সফরে থাকা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেনের মত জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “তালেবান সামরিকভাবে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করুক, ইসলামিক আমিরাত পুনঃপ্রতিষ্ঠা করুক তা কেউই চায় না।”
তালেবানকে শান্তিপূর্ণভাবে বৈঠকে বসারও আহ্বান জানান ব্লিনকেন। যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর সেখানে নিরাপত্তা ক্রমেই ভেঙে পড়ছে। আফগানিস্তানের সঙ্গে চীনেরও সীমান্ত আছে। সীমান্ত এলাকার অনেক ক্রসিং তালেবান দখল করে নিচ্ছে।
একের পর এক জেলাও তাদের দখলে চলে যাচ্ছে। কাতারে শান্তি আলোচনা চললেও তাতে তেমন অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। আফগানিস্তানে সহিংসতা বাড়ার এই সময়ে তালেবান চীন সফরের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পাকাপোক্তভাবে স্বীকৃতি লাভের চেষ্টা নিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বুধবারের বৈঠকে তালেবানের পক্ষ থেকে আফগানিস্তানের মাটি চীনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে না দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বিনিময়ে চীন আফগানদেরকে সহায়তা করে যাওয়া অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং বলেছে, তারা আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না, তবে দেশটির সমস্যা সমাধানে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে।
চীন সরকারের সঙ্গে তালেবানের উচ্চপর্যায়ের এই বৈঠক থেকে এটিই প্রতীয়মান হয় যে, গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আন্তর্জাতিক মহলে স্বীকৃতি পেতে চলেছে তালেবান।