কাস্টমারের দেনা-পাওনাসহ সার্বিক তথ্য দেওয়ার জন্য ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান ইভ্যালিকে তিন সপ্তাহ সময় বেধে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আজ বুধবার (১১ আগস্ট) বিকালে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির প্রথম বৈঠক শেষে এ কথা জানান মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) হাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, আমরা ইভ্যালিকে চিঠি দিয়েছিলাম ১৯ জুলাই। তারপরে তারা ৩১ তারিখ জবাব দিয়ে চিঠি দিয়েছে, এতে সেখানে ১২ দিন সময় চলে গেছে। এখন এই মাসে আরও ১১ দিন গেছে। আজ আমরা বৈঠকে সব কিছু বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাদের তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।
হাফিজুর রহমান আরও বলেন, তিন সপ্তাহের তিন থেকে পাঁচদিনের মধ্যে প্রথমে সম্পদ এবং দায় সম্পর্কিত তথ্য, গ্রাহকদের দেনা-পাওনার তথ্যের জন্য ৭ দিনের মতো হতে পারে এবং মার্চেন্টদের তথ্য দেয়ার জন্য তিন সপ্তাহ হতে পারে।
তিনি বলেন, ইভ্যালি দেনা কীভাবে পূরণ করবে, কাস্টমারের দেনা কীভাবে পরিশোধ করবে সেটির বিষয়ে জানতে চেয়ে আমরা চিঠি দিয়েছিলাম। সে বিষয়ে ০১ আগস্ট তারিখ তাদের চিঠি রিসিভ করেছি। তাদের তথ্য তৈরি করতে ৬ মাস সময় লাগবে বলে আমাদের জানিয়েছে। তারা বলেছে, এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের চুক্তি করেছে। এরমধ্যে ২০০ কোটি টাকা পেয়েছে।
তাদের দাবি অনুযায়ী, ৬ মাসের মধ্যে নিয়মিত তারা পণ্য ডেলিভারি দেবে বলে জানিয়েছে। তারা ১৫ দিন অন্তর অন্তর তথ্য জানাবে। তবে তারা বলছে, ৬ মাসের মধ্যে থার্ড পার্টি দিয়ে অডিট করে রিপোর্ট দেবে।
এর আগে গত রবিবার (৮ আগস্ট) ইভ্যালির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মো. হাফিজুর রহমানকে প্রধান করে ৯ সদস্যের আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা কমিটিতে থাকছেন। এ ছাড়া থাকছেন কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজীব উল আলম। কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে ইভ্যালির ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ, অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান নিয়ে আলোচনা এবং বিবিধ।
ইভ্যালির কার্যক্রম নিয়ে গত ১৯ জুলাই কারণ দর্শানেরা নোটিশ প্রদান করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার পর ইভ্যালি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ছয় মাস সময় চেয়ে আবেদন করে। ওই নোটিশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে মোট ৪০৭ কোটি টাকা দায়ের বিপরীতে ইভ্যালির কাছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকা চলতি সম্পদ কেন? বাকি টাকা ইভ্যালির কাছে থাকলে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে, না থাকলে দিতে হবে পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা। ইভ্যালি কারণ দর্শানোর নোটিশের পরিপূর্ণ জবাব দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ছয় মাস সময় চেয়ে ১ আগস্ট আবেদন করে।