মাজারের মসজিদ থেকে কোরআন শরীফ নিয়ে পাশের পূজামণ্ডপে রাখার কথা স্বীকার করেছেন ইকবাল হোসেন। সেইসঙ্গে হনুমানের মূর্তি থেকে গদাটি সরিয়ে নেয়ার কথাও বলেছেন তিনি।
কুমিল্লা পুলিশ লাইনসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক ইউনিটের জিজ্ঞাসাবাদে এ কথা জানিয়েছেন ইকবাল। তবে কারও কথায় তিনি এ কাজটি করেছেন কিনা, সে বিষয়ে এখনও মুখ খোলেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ধরা পড়ার পর থেকে অস্বাভাবিক আচরণ করছে ইকবাল। তাকে আটক করার পর থেকে সে নিঃসংকোচে বলে আসছিল ‘আমিই সেই ব্যক্তি’।
কুমিল্লায় আনার পর দুপুর ১টা থেকে ইকবালকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক ইউনিটের কর্মকর্তারা। এ সময় ইকবাল ক্লান্ত থাকলেও তাকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এর আগে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তারের পর শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লায় প্রবেশ করে ইকবালকে বহনকারী পুলিশের মাইক্রোবাসটি। বিষয়টা নিশ্চিত করেন কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার।
এদিকে কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে সমুদ্রসৈকত এলাকায় ঘোরাফেরা করার সময় ইকবাল হোসেনকে জেলা পুলিশের একটি দল আটক করে। পরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৩ অক্টোবর ভোরে নানুয়া দিঘিরপাড়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়া যায়। এরপরই দেশের কয়েক স্থানে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার জেরে ওইদিন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচ জন নিহত হন। পরদিন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মন্দির, মণ্ডপ ও দোকানপাটে হামলা–ভাঙচুর চালানো হয়। সেখানে হামলায় দুইজন নিহত হন।
এরপর রংপুরের পীরগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বসতিতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। এরই মধ্যে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পূজামণ্ডপে কোরআন রাখা ইকবালকেও চিহ্নিত করে।