অর্থনীতি

পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর ৫ প্রস্তাব

জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টিসহ কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া ও ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (০৭ ডিসেম্বর) ‘টোকিও নিউট্রিশন ফর গ্রোথ সামিট’-এ ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে পাঁচ দফা প্রস্তাব পেশ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, চলমান কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের পুষ্টি উদ্যোগগুলোকে ব্যাপক বাধার সৃষ্টি করেছে। জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টির ওপর মহামারির প্রভাবের পাশাপাশি কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ এবং ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা দরকার।

প্রথম প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুষ্টি কর্মসূচিতে করোনা মহামারির প্রভাবসহ কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় প্রস্তাবে উচ্চ ফলনশীল পুষ্টিকর খাবারের উৎপাদন বাড়াতে গবেষণায় সহযোগিতা বাড়াতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তৃতীয় প্রস্তাবে দুযোর্গে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক ‘ফুড ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার কথা বলেন শেখ হাসিনা।

চতুর্থ প্রস্তাবে পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সবচেয়ে ভালো চর্চা এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করার কথা বলেন তিনি।

পঞ্চম প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নশীল দেশের খাদ্য উৎপাদনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, জলবায়ু পরিবর্তনের এমন ঘটনাগুলোকে অভিযোজন করতে উন্নত দেশগুলোকে তাদের প্রতিশ্রুত ফান্ড সরবরাহ করতে বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সব নাগরিকের জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করা একটি কঠিন কাজ। কিন্তু পুষ্টি নিরাপত্তায় বিনিয়োগ উচ্চ আর্থ-সামাজিক রিটার্ন তৈরি করে, যা টেকসই প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের পথে পরিচালিত করে।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে টানা তিনবারের সরকারপ্রধান বলেন, গত এক দশকে বাংলাদেশ অর্থনীতি, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি ক্ষেত্রে উল্লেখ্যযোগ্য অগ্রগতি এবং অভূত সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পুষ্টির অবস্থা উন্নত করতে অনেকগুলো উদ্যোগ নিয়েছি।

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য ভাতা চালু, অসচ্ছল গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের নগদ ভাতা দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন।

এছাড়াও স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য মিড-ডে মিল চালু, খাদ্য নিরাপত্তা এবং উন্নত পুষ্টির লক্ষ্যে শস্য, শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম এবং ফলের উৎপাদন বহুমুখী করার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমাদের পদক্ষেপগুলো ফল দিতে শুরু করেছে। গত এক দশকে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে বলে জানান তিনি।

উচ্চ পর্যায়ের এই ভার্চুয়াল সামিটে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশোদা ফুমিও, ডিআরসি প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স আন্তোইন শিসেকেদি শিলোম্বো, জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশি, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাস, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস এবং ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর।

এছাড়াও সামিটে তিমুর-লেস্তের প্রধানমন্ত্রী তাউর মাতান রুয়াক এবং এল সালভাদরের ফার্স্ট লেডি গ্যাব্রিয়েলা রদ্রিগেজের ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *