খেলাধুলা

লাল সাফল্যের সুবাস নিয়ে সাদার আঙিনায় ইবাদত

মাউন্ট মঙ্গানুই থেকে চট্টগ্রাম। লাল বল থেকে সাদা বল। সাদা পোশাকের বদলে এখন রঙিন জার্সি। টেস্টের জায়গায় এখন ওয়ানডে। পার্থক্য অনেক। সংস্করণে, ধরণে, স্কিলে, মানসিকতায়! তবে মনের শক্তিতেই সব পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে চান ইবাদত হোসেন চৌধুরি। তার মন যে আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর!

আত্মবিশ্বাস ব্যাপারটিই এমন অদ্ভুত। প্রতিবন্ধকতা যতই থাকুক, প্রতিকূলতা সামনে যতই আসুক, সব জয় করার সাহস ভর করে মনে। এগিয়ে যাওয়ার তাড়না কাজ করে ভেতরে। ইবাদত যেমন উড়ছেন সেই বিশ্বাসের ডানায়।

মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে তার অসাধারণ বোলিংয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস গড়া জয়ের পর পেরিয়ে গেছে দেড় মাস। ইবাদত এখন আছেন নিউ জিল্যান্ডের সেই পর্যটন শহর থেকে ১১ হাজার কিলোমিটার দূরত্বে বাংলাদেশের বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। কিউইদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষে দেশে ফিরে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট বিপিএল খেলে এখন তিনি ওয়ানডের ভুবনে। জায়গা পেয়েছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলে।

তবে ইবাদত এখনও ডুবে আছেন টেস্ট সাফল্যেই। সেই আবেশ মেখেই ওয়ানডেতে সৌরভ ছড়াতে চান এই পেসার।

“বছরের শুরুটা আমরা খুব ভালোভাবে করেছি। নিউ জিল্যান্ডকে আমরা হারিয়েছি ওদের মাটিতে। তখন থেকেই আত্মবিশ্বাসী আছি। এরপর বিপিএল খেলেছি। বিপিএলেও অনেক আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। সেই আত্মবিশ্বাস আমি আফগানিস্তান সিরিজে কাজে লাগাতে চাই।”

যদিও তার ওয়ানডে দলে ডাক পাওয়াটা বেশ বিস্ময়ের। টেস্টে তিনি নিয়মিত সদস্য অনেক দিন ধরেই। কিন্তু ৫০ ওভারের সংস্করণ মিলিয়ে খেলেছেন স্রেফ ১১টি। তাতে উইকেট মাত্র ১০টি। সবশেষ ম্যাচটি খেলেছেন প্রায় ২ বছর আগে। মূলত লাল বলের সাফল্য আর বিপিএলে তার বোলিং দেখেই নেওয়া হয়েছে তাকে। হঠাৎ পাওয়া সুযোগটা কাজে লাগাতে তিনি মরিয়া।

“আলহামদুলিল্লাহ, ওয়ানডে দলে সুযোগ পেয়েছি। সারপ্রাইজড আসলে… প্রথম যখন শুনেছি যে ওয়ানডে দলে সুযোগ পেয়েছি, এটার জন্য আলহামদুলিল্লাহ। আমি ভালো করার চেষ্টা করব।”

“মাত্র লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলেছি ১১টা, আমি জানি। এই প্রথম সুযোগ পেয়েছি ওয়ানডে দলে। গত বিপিএলে আমাদের দলে তামিম ভাই, মাশরাফি ভাই ও রিয়াদ ভাই ছিলেন। অনেক সাপোর্ট পেয়েছি উনাদের কাছ থেকে। এখন আবার সাদা বলে অনুশীলন করছি। ভালো করার চেষ্টা করব।”

এতদিন ইবাদতের কাছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মানেই ছিল কেবল লাল বলের জগত। শুধু ম্যাচ খেলাই নয়, তার অনুশীলনের বেশির ভাগটাও ছিল লাল বলেই। এখন সাদা বলে মানিয়ে নেওয়া, ওয়ানডের লাইন-লেংথ, ব্যাটসম্যানকে পড়া, ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে বল করা, এসবও রপ্ত করতে হবে দ্রুত। ইবাদত আশাবাদী, এই চ্যালেঞ্জ তিনি উতরাতে পারবেন।

“সারাদিন এক জায়গায় বল করার সামর্থ্য থাকতে হয় (টেস্টে)। এখানে একটু আলাদা। চেষ্টা করব যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মানিয়ে নেওয়ার। আমার সবচেয়ে বড় (চাওয়া) হচ্ছে… চেষ্টা করব এখানে নতুন বল কাজে লাগানোর।”

তার আশা শুধু নিজেকে নিয়েই নয়, দলের পুরো পেস ইউনিট নিয়েই। পেস আক্রমণ দিয়েই সিরিজে পার্থক্য গড়তে চান তিনি।

“আমরা ফাস্ট বোলাররা চেষ্টা করব, এখানে যে তিনটা ম্যাচ আছে, অন্তত একটা-দুইটা ম্যাচ জেতাব ইনশাল্লাহ। আমি আশা করি যে… আমাদের ফাস্ট বোলিং বিভাগে খুব ভালো সময় যাচ্ছে সবার। চেষ্টা করব আমরা ৩-০ ম্যাচে ডমিনেট করার।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *