না থেকেও যেন প্রবলভাবে আছেন সাকিব আল হাসান। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের দলে তিনি নেই, কিন্তু ঘুরেফিরে আসছে তার প্রসঙ্গ। সেই আলোচনা ঝেড়ে ফেলে সামনে তাকাতে চান হাবিবুল বাশার। দক্ষিণ আফ্রিকার পথে রওনা হওয়ার আগে এই জাতীয় নির্বাচক বলে গেলেন, এই দল নিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকায় জয় খরা কাটানোর বিশ্বাস আছে তার।
তিন গ্রুপে ভাগ হয়ে এবার দক্ষিণ আফ্রিকায় যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে উড়ানে চেপেছে প্রথম দল, যেখানে ছিলেন হাবিবুল। শুক্রবার রাত ১১টায় যাবে সবচেয়ে বড় গ্রুপটি, শনিবার সকাল পৌনে ১১টায় রওনা হবে শেষ দল।
এই তিন গ্রুপের কোনো একটিতে থাকতে পারতেন সাকিবও। টেস্ট-ওয়ানডে, দুই সংস্করণেই তাকে রেখে ঘোষণা করা হয়েছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি যাচ্ছেন না সফরে।
দলের সেরা ক্রিকেটারকে না পাওয়া মানে সম্ভাবনায় চোট নিশ্চিতভাবেই। সাকিব একইসঙ্গে বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান ও বোলার, তাকে ছাড়া তাই একাদশের ভারসাম্যও নড়ে যায় খানিকটা। সেই বাস্তবতা জানেন হাবিবুল বাশারও। তবে যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি শোনালেন আশার গান।
“সাকিবকে অবশ্যই মিস করব। আমাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ একজন খেলোয়াড়। সাকিব দলে থাকলে দলের ভারসাম্য অনেক ভালো থাকে। লম্বা সময় ধরে সে আমাদের সেরা পারফরমারদের একজন। বিশ্ব ক্রিকেটে তার পাফরম্যান্স আমরা দেখেছি। তবে এখন আর এটা নিয়ে ভাবছি না। আমাদের যে দলটা আছে, ওদের নিয়েই ভাবছি। আমাদের বিশ্বাস, এই দলটা নিয়েই আমরা ভালো পারফর্ম করতে পারব।”
“সব সময় আপনি সেরা খেলোয়াড়কে পাবেন না। তার জায়গায় যে খেলবেন, সে-ই এখন সেরা খেলোয়াড়। তাকে নিয়েই চেষ্টা করতে হবে। এর আগেও সেরা খেলোয়াড়দের ছাড়া আমাদের খেলতে হয়েছে এবং পারফর্মও করেছি। আমার বিশ্বাস, যারা দলে আছেন, তারা ভালো করতে পারবে।”
সেই ভালো করা মানে ম্যাচ জয়। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকায় ৬ টেস্ট ও ১৪ ওয়ানডে খেলে জয় ব্যাপারটির সঙ্গে কোনো পরিচয় নেই বাংলাদেশের। তবে ওয়ানডে দল এখন অনেক পোক্ত ও অভিজ্ঞ। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে এখন ১০০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বাংলাদেশ। সেই ধারাবাহিকতার পথ ধরে এবার ওয়ানডেতে অন্তত খরা কাটানোর আশায় বুক বাঁধছেন হাবিবুল।
“দক্ষিণ আফ্রিকার দলটা যথেষ্ট ভালো। কন্ডিশনও আমাদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং। তবে আমাদের ওয়ানডের ফর্ম যদি দেখেন, একটু আশাবাদী তো হতেই পারি। সেই আশা নিয়েই যাচ্ছি। আমরা জানি যে, আমাদের কাজটা কঠিন হবে। ওরা ওদের সেরা দলটা নিয়েই আমাদের সঙ্গে নামছে। ওরা এবার মূল ভেন্যুতেই খেলাগুলো দিচ্ছে, মানে বাংলাদেশকে গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে।”
“সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে পারফর্ম করছি আমরা, যে ফর্মে আছে বাংলাদেশ দল, সেই ফর্ম যদি ধরে রাখতে পারি, নিজেদের সেরাটা যদি দিতে পারি, ভালো কিছুর আশা আমরা করতেই পারি। সেই আশা নিয়েই যাচ্ছি যে অন্যান্যবারের চেয়ে আমরা ভালো করব এবার।”
ওয়ানডে সিরিজের আগে অবশ্য সময় খুব বেশি পাচ্ছে না দল। ওয়ানডে দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটার যাবেন শুক্রবার রাতের ফ্লাইটে। শনিবার পৌঁছে রোববার বিশ্রাম। আগামী শুক্রবার ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে ও অনুশীলনের জন্য সময় স্রেফ চার দিন।
তবে গত কয়েক মাসের টানা খেলা ও ঠাসা সূচিতে কয়েকদিন আগে যাওয়ার বাস্তবতাও ছিল না। হাবিবুল তাই বললেন, এই কদিনে যতটা সম্ভব প্রস্তুত হতে হবে প্রোটিয়া চ্যালেঞ্জের জন্য।
“সময় ও পরিস্থিতি বিবেচনা করলে এর চেয়ে ভালো প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ ছিল না। একটু আগে গেলে হয়তো আরেকটু ভালো হতো। কারণ, কন্ডিশন সম্পূর্ণ আলাদা। সেখানে বেশি সময় কাটাতে পারলে, দু-একটি প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলতে পারলে সেটা অনেক সাহায্য করতে পারত অবশ্যই। তবে কিছু করার নেই। যেটুকু প্রস্তুতির সময় পাব, সেটুকুতেই নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।”