রাজনীতি

ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে ‘গুলিয়ে ফেলেছেন’ ফখরুল: তথ্যমন্ত্রী

বিনোদন মাধ্যম ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে রাজনীতির চেষ্টা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টি ‘গুলিয়ে ফেলেছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্ম নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, “সব কিছুতে রাজনীতি নিয়ে আসাটা কখনো সমীচীন নয়।”

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, “ওটিটি প্ল্যাটফর্ম কোনো রাজনৈতিক ইস্যু নয়, তারপরও কেউ কেউ এ বিষয়টিকে কেন রাজনীতিতে টেনে আনেন সেটা আমার বোধগম্য নয়।

“আমি আশ্চর্য হলাম মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলিয়ে ফেলেছেন। এত বড় দলের একজন মহাসচিব। যিনি মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন।

“তিনি কিভাবে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বিনোদন মাধ্যমকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আর গণমাধ্যমের সাথে গুলিয়ে ফেললেন, সেটা দেখে আমার নিজেরও লজ্জা লেগেছে।”

শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, সোশাল মিডিয়া এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) খসড়া দুই নীতিমালা আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের লঙ্ঘন।

খসড়া এই দুটি নীতিমালা সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক দাবি করে সরকার এই নীতিমালা গ্রহণ করলে কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

তবে সবার দাবির প্রেক্ষিতে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নীতিমালা হচ্ছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রয়োজনীয়তার নিরিখে এবং সকলের দাবির প্রেক্ষিতে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে।

“ওটিটি প্ল্যাটফর্ম কোনো গণমাধ্যম নয়। এটি একটি বিনোদন মাধ্যম, এটি কোনো পত্রিকা বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও নয়। এটি আজকের পৃথিবীর ক্রমবর্ধমান বিনোদন মাধ্যম।”

এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, “তাকে যারা পরামর্শ দিয়েছেন তাদের উচিৎ ছিল তাকে সৎ পরামর্শ দেয়া। তারও প্রয়োজন ছিল এটি নিয়ে জেনে শুনে কথা বলা।”

পাশের কিছু দেশ বাংলাদেশের বাজারকে এই প্ল্যাটফর্মে আমন্ত্রণ জানিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এসব প্ল্যাটফর্মে এমন অনেক কিছুই প্রচার করা হয়, যা এ দেশের সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, এজন্য ওটিটি নীতিমালা প্রয়োজন।

“তখন আমাদের দেশে একটি দাবি উঠেছিলে একটি নীতিমালা করার জন্য। সব কিছুরই একটি নীতিমালা থাকতে হয়। সেজন্য আমরা একটি নীতিমালা করার জন্য হাত দিয়েছি।

“সেখানে অংশীজনদের সাথে আলোচনা করে একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। সেটা ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে আরও মতামত চেয়ে। এরপরই এটি চূড়ান্ত হবে।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে কৃষ্টি, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো কিছু যেন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে না যায়। সেখানে এমন কোনো কিছু যাতে আপলোড না হয় যা নতুন প্রজন্ম ও সমাজকে মিসলিড করবে।

“এছাড়া বিদেশি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম যেন আমাদের দেশেকে ইনভাইট করতে না পারে এছাড়া আমাদের দেশে যে সকল ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো ধীরে ধীরে বাজারে আসছে তাদের যেন সুরক্ষা হয়।”

পাশের দেশে এ সম্পর্কিত নীতিমালার উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিদেশি ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো আমাদের দেশে যথেচ্ছভাবে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বাজার দখল করছে। সেটা কোনো দেশে হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।

“সে কারণে ভারতে অনেক আগেই একটি নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কোনো জিনিস আপলোড করতে হলে সরকারের অনুমতি নিতে হয়। আমরা কিন্তু সেটা করতে চাই না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *