জাতীয়

কুষ্টিয়ায় আ. লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে চারজন নিহত

কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার ঝাউদিয়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে ১৫ জন।

সোমবার (০২ মে) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার ঝাউদিয়া ইউনিয়নের আস্তানগর গ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা কেরামত গ্রুপ ও ফজলু গ্রুপের মধ্যে শত্রুতার জের এবং আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে পুলিশ।

নিহতরা হলেন- স্থানীয় আস্তানগর গ্রামের বাসিন্দা মৃত আজিজুল হকের ছেলে মতিয়ার রহমান (৪৫), দাউদ মণ্ডলের ছেলে লাল্টু মণ্ডল (৪২), আবুল কাশেম (৬৫) ও আব্দুর রহিম মালিথা (৭০)।

প্রথম তিনজন বর্তমান ঝাউদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা মেহেদী হাসানের সমর্থক এবং আব্দুর রহিম মালিথা প্রতিপক্ষ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কেরামত আলীর সমর্থক।

স্থানীয় প্রত্যদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আস্তানগর বাজারে কেরামত আলীর সমর্থক আব্দুর রহিম মালিথার সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মেহেদী হাসানের সমর্থকরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে রহিমের ওপর হামলা চালায়। এসময় লাঠির আঘাতে রহিম মাটিতে পড়ে যান। পরিস্থিতি বেগতি দেখে মেহেদী সমর্থকরা স্থান ত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। ইতোমধ্যে রহিমকে মারধরের সংবাদ পেয়ে কেরামত আলীর সমর্থকরা পাল্টা মেহেদী সমর্থকদের ওপর হামলা চালালে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে মেহিদীর সমর্থকরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে এই সুযোগে কেরামত আলীর সমর্থকরা লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আঘাত করে। এসময় মেহেদীর সমর্থক মতিয়ার, লাল্টু ও আবুল কাশেম গুরুতর জখম হয়।
পরে সংবাদ পেয়ে ইবি থানা পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক চারজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া হাসপাতালে ভর্তি আহত ১৫ জনের মধ্যে আরও দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. আশরাফুল আলম।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান রতন জানান, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার ও জমিজমা সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের জেরে কেরামত আলী সমর্থক ও মেহেদী হাসান সমর্থকদের মধ্যে পূর্ব থেকেই উত্তেজনা চলছিল। সোমবার দুই পক্ষের সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। বর্তমানে পরিস্থিতির পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখনও কেউ কোনো অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

এদিকে সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসানের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি তা রিসিভ করেননি।

ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি কেরামত আলীর মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি জানান, বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত আমার বডিগার্ড রফিকুলের বাবা রহিম মালিথাকে হত্যা করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *