খেলাধুলা

ইতালিকে উড়িয়ে ‘নতুন চ্যাম্পিয়ন’ আর্জেন্টিনা

বছরখানেক আগে যে মাঠে ইউরো জয়ের উৎসব করেছিল, সেখানে ফেরাটা রাঙাতে পারল না ইতালি। আক্রমণাত্মক ফুটবলে আধিপত্য করল আর্জেন্টিনা। প্রথমার্ধে জোড়া গোল করে নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধেও চাপ ধরে রাখল দলটি। ইউরোপ চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে মুকুটে নতুন পালক যোগ করল লিওনেল স্কালোনির দল।

লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে ফিনালিস্সিমা নামের আলোচিত ম্যাচটি ৩-০ গোলে জিতে এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয় শিরোপা জিতল আর্জেন্টিনা। দুটি গোলই হয় প্রথমার্ধে। লাউতারো মার্তিনেস দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আনহেল দি মারিয়া।

দুই মহাদেশ সেরার লড়াইয়ের শুরুটা হয় একটু ঢিমেতালে। তবে খানিক বাদেই মেলে গতি, আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। প্রথম ২০ মিনিটে দুই দল একটি করে হাফ-চান্স পায়, যদিও তার কোনোটিই প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের পরীক্ষা নেওয়ার মতো ছিল না।

২৫তম মিনিটে মেসির শট প্রতিহত হয়। তিন মিনিট পর ডি-বক্সে দারুণ পজিশনে বল পেয়েও গোলরক্ষক বরাবর দুর্বল শট নিয়ে হতাশ করেন পিএসজি তারকা।

পরক্ষণেই অসাধারণ নৈপুণ্যে দলকে এগিয়ে নেন মেসি। তিনি গোলদাতা না হলেও মূল অবদান তারই। সতীর্থেরে পাস ধরে বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন মেসি। পুরোটা সময় সঙ্গে লেগে ছিলেন ডিফেন্ডার জিওভান্নি দি লরেন্সো, কিন্তু কিছুই করতে পারেননি তিনি। আরও খানিকটা এগিয়ে গোলমুখে বল বাড়ান মেসি, সেখানে ছোট্ট টোকায় বাকি কাজ সারেন মার্তিনেস।

দুই মিনিট পর পাল্টা জবাব দেওয়ার সুযোগ পায় ইতালি। কিন্তু নিকোলো বারেল্লা বক্সের বাইরে থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে দ্বিতীয় গোল করে চালকের আসনে উঠে বসে আর্জেন্টিনা।

মাঝমাঠে লিওনার্দো বোনুচ্চির বাধা এড়িয়ে বল পায়ে এগিয়ে কোনাকুনি থ্রু বল বাড়ান লাউতারো মার্তিনেস। সেদিকে ছুটে যান আরেক ডিফেন্ডার কিয়েল্লিনি। কিন্তু তাকে কোনো সুযোগই দেননি দি মারিয়া, চোখের পলকে বক্সে ঢুকে প্রথম ছোঁয়ায় চিপ শটে আগুয়ান গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন পিএসজিকে বিদায় জানানো এই মিডফিল্ডার।

দ্বিতীয়ার্ধের দশম মিনিটে নিজেদের ভুলে আরেক গোল খেতে বসেছিল ইতালি। ডি-বক্সের মধ্যে থেকে কী বুঝে ব্যকপাস দেন বোনুচ্চি, গোলরক্ষক বরাবরও ছিল না। তবে ভাগ্য ভালো যে গতি ছিল না, একেবারে শেষমুহূর্তে ঠেকান জানলুইজি দোন্নারুম্মা।

খানিক পর দুই মিনিটে দুবার গোলের সুযোগ তৈরি করেন দি মারিয়া। ৬০তম মিনিটে তার জোরাল শট প্রতিপক্ষের একজয়ের পায়ে লেগে ক্রসবার ঘেঁষে ভিতরে ঢুকতে যাচ্ছিল, কোনোমতে এক হাত দিয়ে ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান গোলরক্ষক। মেসির নেওয়া ওই কর্নারেই বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে বুলেট গতির ভলি মারেন দি মারিয়া। তবে গোলরক্ষক বরাবর ছিল বলে ইতালির রক্ষা।

প্রবল চাপ ধরে রেখে পরের কয়েক মিনিটে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে আর্জেন্টিনা। সুযোগও আসতে থাকে অনেক। তিন মিনিটের মধ্যে দুই পাশ থেকে নিচু শটে চেষ্টা করেন মেসি, কিন্তু ঠেকিয়ে দেন দোন্নারুম্মা। মাঝে একবার তার বাড়ানো পাস ছয় গজ বক্সে ফাঁকায় পেয়েও পাশের জালে মারেন লাউতারো মার্তিনেস।

৬৯তম মিনিটে আরও একবার মেসিকে হতাশ করেন দোন্নারুম্মা। সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ীর জোরাল শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *