শুধুমাত্র হাত দিয়ে পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খোলা হয়নি, এ কাজের জন্য সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) রেজাউল মাসুদ।
সোমবার (২৭ জুন) দুপুরে মালিবাগে সিআইডির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রেজাউল মাসুদ বলেন, পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু হাত দিয়ে খোলা সম্ভব না। এ বিষয়ে আমরা সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা করে জেনেছি এত বড় একটা স্থাপনার নাট-বল্টু হাত দিয়ে খোলা যাবে না। এতে বোঝা যায় নাট-বল্টু হাতে দিয়ে খোলা হয়নি, এগুলো খোলার জন্য সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে।
গ্রেফতার বায়েজিদের বিরুদ্ধে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, বায়জিদ তালহা ও তার বন্ধু কায়সারের টিকটক আইডি রয়েছে। কায়সারের আইডি থেকে গতকাল ৩০-৩৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও আপলোড হয়েছে। ভিডিওটি আপলোড হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে আমরা বায়জিদকে শনাক্ত করে তাকে গ্রেফতার করি।
রেজাউল মাসুদ জানান, রোববার (২৬ জুন) সকাল ৭ টা থেকে ১১ টার মধ্যে ঘটনাটা ঘটেছে। বায়জিদ ও কায়সার দুই বন্ধু মিলে প্রাইভেটকারে করে পদ্মা সেতুতে যান। বায়জিদ জাজিরা প্রান্তের ৩০-৩৫ নম্বর পিলারের মধ্যে নেমে নাটবল্টু খুলে ফেলেন । এতে তিনি মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করেছেন।
রেজাউল মাসুদ বলেন, আমরা বায়জিদের কাছ থেকে ডিভাইস উদ্ধার করেছি। আরও কিছু ভিডিও ও আগের অ্যাক্টিভিটিজ দেখে মনে হয়েছে এটা অন্তর্ঘাতমূলক কাজ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কী জানা গেছে জানতে চাইলে রেজাউল মাসুদ বলেন, সবকিছু বিবেচনায় আমরা মনে করছি এই কাজটা সেই করেছে, তার একটা পরিকল্পনা ছিল। বাকিটা তদন্তে আসবে।
বিস্তারিত জানতে চাইলে অনেক প্রশ্ন এড়িয়ে যান সিআইডির এই কর্মকর্তা।
এর আগে রোববার (২৬ জুন) ৩৪ সেকেন্ডের একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, সেতুর রেলিংয়ের দুটি নাট হাত দিয়েই খুলে ফেলেন বায়েজিদ। খোলা নাট হাত নিয়ে তিনি বলেন, ‘এই হলো পদ্মা সেতু আমাদের…পদ্মা সেতু। দেখো আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার পদ্মাসেতু। এই নাট খুইলা এহন আমার হাতে। ’
এ সময় পাশে থেকে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘ভাইরাল কইরা ফালায়েন না। ’
ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে। পরে সিআইডি বায়েজিদকে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে আটক করে।