দেশে অস্থির হয়ে উঠেছে ডলারের বাজার। খোলা মার্কেটে তা সর্বোচ্চ ১১২ টাকা করে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
ডলারের এই বাজার নিয়ন্ত্রণে ও স্বাভাবিক রাখতে এবার মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১০টি পরিদর্শক দল বাণিজ্যিক ব্যাংক, মানি এক্সচেঞ্জ হাউস ও খোলাবাজার পরিদর্শন শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম।
জানা গেছে, দিনের শুরুতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদন্ত শুরু করলে বাজারের পরিস্থিতি পাল্টে যায়। মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে হিসাবের বাইরে খোলাবাজারের মতো আগে ডলার বেচাকেনা হতো। সেটি বন্ধ হয়ে যায়। তারা ক্যাশ রেজিস্টারের মাধ্যমে ডলার বেচাকেনা করেছে। ফলে বেশির ভাগ মানি এক্সচেঞ্জই ১০৫ টাকায় ডলার কিনে ১০৮ টাকার মধ্যে বিক্রি করেছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি ডলারের বিনিময় হার নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় বিষয়টি সরেজমিনে দেখবে বাংলাদেশ ব্যাংক। মানি চেঞ্জাররা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মকানুন মানছেন কিনা, তা জানতে অভিযান চালানো হচ্ছে। এজন্য নির্ধারিত টিম কাজ করছে। বাজার স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই পরিদর্শন চলবে।
জানা গেছে, ডলার কারা কিনছে, কোনো যৌক্তিক কারণ আছে কিনা, প্রতিদিন কেমন ডলার কেনা হচ্ছে, এর বিপরীতে বিক্রি কেমন, দর কত—এসব তথ্য সংগ্রহ করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল। একইসঙ্গে ডলার বেচাকেনায় নিয়ম মানা হচ্ছে কিনা, সে বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এদিকে ব্যাংক ও মানি এক্সচেঞ্জগুলোকে নগদ ডলার বিক্রিতে কড়াকড়ি আরোপ করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এখন সরকারি অনুমোদন ও বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া কাউকে নগদ ডলার দিচ্ছে না। বেশির ভাগ ব্যাংকেই নগদ ডলারের প্রবাহ কম। ফলে অনেকেই চাহিদা অনুযায়ী ডলার পাচ্ছেন না।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমছে কিছুদিন ধরেই। এক মাসের ব্যবধানে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে ৫ শতাংশের বেশি। আর এক বছরের ব্যবধানে কমেছে ১০ দশমিক ৮০ শতাংশ। আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে এক ডলারের জন্য খরচ করতে হয়েছে ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা, তবে সব ব্যাংকেই নগদ ডলারের দাম বেড়ে ১০০ টাকার ওপরে উঠেছে। ১০৫ থেকে ১০৮ টাকায় বিক্রি করছে কোনো কোনো ব্যাংক। গত মঙ্গলবার কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজারে ডলারের দর সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ১১২ টাকায় বেচাকেনা হয়।